পুঁজিবাজারে লেনদেনে খরা ডে ট্রেডারের ভূমিকায় প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা
মাসুদ মিয়া : দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন চলছে পাশাপাশি লেনদেনে খরা দেখা যাচ্ছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর লেনদেন ৫০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। আর প্রায় প্রতিদিনই তালিকাভুক্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমছে। ডে ট্রেডারদের ভুমিকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিজেদের শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকায় বাজারের গতি স্বাভাবিক হচ্ছে না বলে মনে করছেন। একই সঙ্গে ব্যাংক ও নতুন প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমায় বাজারের চেহারা যেন বদলে গেছে। আর এ নিন্মমুখী বাজারে লাভের পরিবর্তে প্রতিদিনই লোকসানের হিসাব কষতে হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। প্রতিদিনই তাদের পোর্টফোলিও থেকে উধাও হচ্ছে পুঁজি। সরেজমিন দেখা যায়, লেনদেনের গতি কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন। এবিষয়ে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ‘হঠাৎ এভাবে লেনদেন কমে যাবে- এটা ধারণা করতে পারিনি।’ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তারা এখন ডে ট্রেডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এটা করলে বাজার নিজস্ব গতি হারাবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রকৃত কাজ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ।
এখন দেখছি তার উল্টো চিত্র। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশা করেন না কেউ-ই। একই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘পুঁজিবাজারে সবাই লাভের জন্য আসেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেলে শেয়ার বিক্রি করে দেবেন- এটা স্বাভাবিক। এজন্য তাদের দায়ী করা ঠিক হবে না।’ একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শেয়ার বিক্রিতে মেতে উঠেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বিক্রির তুলনায় তারা শেয়ার কিনছেন খুবই সীমিত।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি না থাকলে পুঁজিবাজার তার স্বাভাবিক গতি হারায়। যে কারণে কমে যায় লেনদেন। কমতে থাকে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ও বাজার মূলধন। এখন যারা বাজারে লেনদেন করছেন, তারা সাধারণ বিনিয়োগকারী।
তারা বলছেন, পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে রাখার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা জরুরি। তাই বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে হবে।
কিন্তু দেশে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ খুবই কম।