সাক্ষাৎকারে ওয়ার্কার্স পার্টির শীর্ষ নেতা বিমল বিশ্বাস সরকারের পদক্ষেপগুলো প্রধান বিচারপতির ছুটির ক্ষেত্রে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করছে
রফিক আহমেদ : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পলিট ব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস বলেছেন, সরকারের পদক্ষেপগুলো প্রধান বিচারপতির ছুটির ব্যাপারে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিচালিত ৭২-৭৫ এর সরকারের মধ্যে মোস্তাক চক্রের শক্তিশালী অবস্থান ছিল। বর্তমান সরকারের মধ্যে সে ধরনের শক্তি আছে কিনা জানি না। গতকাল রোববার ওয়ার্কার্স পার্টির শীর্ষ এ নেতার কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন পাঠালে তিনি লিখিতভাবে এসব কথা জানান। বিমল বিশ্বাসকে প্রধান বিচারপতির ছুটি নিয়ে সরকার পক্ষের ধুম্রজাল সৃষ্টির কারণ কি প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ প্রশ্নের জবাব সরকারই যথার্থভাবে দিতে পারে, আমার পক্ষে ঘটনাবলীর ধারাবাহিকতায় কিছু কথা বলা সম্ভব। দেশি-বিদেশি কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর প্ররোচনায় ও উসকানিতে এ ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টির কথা বলার সুযোগ রয়েছে। সরকারের উচিত জনগণের মধ্যে যে ধরনের প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে এবং ধুম্রজাল সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির অপপ্রয়াস রয়েছে, সে ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে দেশবাসীকে সংশয় এবং প্রশ্ন উদ্বেগকারী অবস্থান থেকে সজাগ-সচেতন করা উচিত। যে সকল পদক্ষেপ জনগণকে বিভ্রান্ত ও হতাশাগ্রস্থ করতে পারে, সেগুলো বিবেচনায় রেখেই নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের দ্বন্দ্বকে দেখবার বা ভাববার যে ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে, তাকে স্পষ্টভাবে জনগণের কাছে বলা দরকার। তবে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে যে বেকায়দায় ফেলা ও অস্থিতিশীল পরিস্থতি সৃষ্টি করা তা অনেকটা বোধগম্য।
ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য বলেন, এ ধরনের খবর পত্রপত্রিকায় দেখেছি কিন্তু কতখানি প্রধান বিচারপতি বাধ্য হয়েছেন তা আমার পক্ষে নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। কারণ তিনি ছুটির জন্য আবেদনপত্রে কি লিখেছেন তা তো আমি জানি না, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে অসুস্থতার কথা বলে ছুটি দেওয়া হয়েছে বলা হচ্ছে। অন্যদিকে বিচারপতি বলছেন তিনি সুস্থ আছেন এবং ছুটিতে গেছেন। আমি আশা করি খুব অল্পদিনের মধ্যেই সরকারের বক্তব্য ও প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের সত্য-অসত্য স্পষ্টভাবে জানা যাবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী শক্তির উল্লাস যেমন প্রত্যক্ষ করেছি, তেমনিভাবে সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিদের ক্ষুব্ধতা ও প্রধান বিচারপতির সম্পর্কে দুর্নীতি ও নানা ধরনের অভিযোগ উত্থাপন হতে দেখেছি। পার্থক্য হচ্ছে প্রধান বিচারপতির দেশ ত্যাগের পর সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারের অতীতের বক্তব্যগুলোর সুনির্দিষ্ট প্রকাশ দেখছি মাত্র। বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারা ক্ষীয়মান ও অপরাজনীতির ধারা শক্তিশালী। চরিত্র হননের যে পথ তার থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি মুক্ত নয় বিধায় চরিত্র হননের প্রকাশ হিসাবে দেখছি একথাই বলতে পারি। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ