সৌদি রাজপরিবারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ
লিহান লিমা : আকস্মিকভাবে শনিবার রাতে সৌদি আরবে ১১ রাজপুত্র এবং সাবেক ও বর্তমানকালের ১৪ জন মন্ত্রীকে আটক করেছে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী কমিটি। সৌদি ন্যাশনাল গার্ড এবং নৌবাহিনী প্রধানের পদেও হয়েছে রদবদল। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্নীতি বিরোধী এই ধরপাকড় এবং দুজন মন্ত্রীকে সরিয়ে দেবার পর, সৌদি আরবের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর যুবরাজ সালমানের একক কর্তৃত্ব আরও সুসংহত হয়েছে। আরব নিউজের খবরে বলা হয়, সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানকে দিয়ে একটি দুর্নীতিবিরোধী কমিটি গঠন করেন এবং এর সর্বোচ্চ ক্ষমতা তাকে প্রদান করা হয়। এই কমিটির মাধ্যমে যুবরাজ চাইলে যে কাউকে গ্রেফতার, যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং কারো ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবেন।
বাদশা সালমানের প্রিয় পুত্র ও শীর্ষ এই উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক নীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিজের প্রাধান্য বিস্তার করেছেন। রাজপরিবারে অসন্তোষের কণ্ঠরোধেও তিনি সিদ্ধহস্ত।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মন্ত্রিপরিষদে এ রদবদল যুবরাজ সালমানকে রাজ্যের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে সহায়তা করবে, যা দীর্ঘদিন ধরে শাসক পরিবারের আলাদা আলাদা ক্ষমতা শাখা থেকে পরিচালিত হতো।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন ধনকুবের ও এক সময়ের ক্ষমতাবান রাজপুত্র আল ওয়ালিদ বিন তালাল, সাবেক অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আল আসাফ ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আদেল ফকিহ। সৌদি আরব জাতীয় গার্ডের প্রধানের পদ থেকে রাজপরিবারের প্রভাবশালী সদস্য মিতেব বিন আব্দুল্লাহকে সরিয়ে খালেদ বিন আয়াফকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। নৌবাহিনীর কমান্ডার আবদুল্লাহ আল সুলতানের জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ ফাহাদ আল-গাফলিকে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার ফলে এ রদবদলের মাধ্যমে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর উপর যুবরাজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হলো। সিএনএনএর খবরে বলা হয়, ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম কোন ক্রাউন প্রিন্স ক্ষমতার সর্বোচ্চ কেন্দ্রে অবস্থান করলেন।
তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, তার এই দ্রত উত্থানের কারণে সৌদি আরবের নাগরিকরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই তার দৃষ্টিভঙ্গির ও অর্থনেতিক সংস্কারের প্রশংসা করছেন আবার অনেকে তাকে হঠকারী, ক্ষমতালিপ্সু ও অনভিজ্ঞ হিসেবে দেখছেন। সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স