জুতা উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে চতুর্থ বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক ডেস্ক : বছরে ৩৫ কোটি জোড়া জুতা উৎপাদনের মাধ্যমে বৈশ্বিক ফুটওয়্যার শিল্পের শীর্ষ ১০ উৎপাদনকারীর তালিকায় আগেই অবস্থান করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে উৎপাদন প্রবৃদ্ধি জোরদারের মাধ্যমে এখন আরো এগিয়ে গেছে দেশের পাদুকা শিল্প। পর্তুগালভিত্তিক জুতা প্রস্তুতকারকদের সংগঠন পর্তুগিজ ফুটওয়্যার, কম্পোনেন্টস, লেদারগুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এপিআইসিসিএপিএস) গত তিন বছরের ফুটওয়্যার ইয়ারবুকে উল্লিখিত উৎপাদন প্রবৃদ্ধির গড় বিবেচনায় শীর্ষ ১০ উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বণিক বার্তা
এপিআইসিসিএপিএসের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বছরে ২ হাজার ৩০০ কোটি জোড়া জুতা উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি উৎপাদন করে চীন। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে দেশটিতে উৎপাদনের পাশাপাশি উৎপাদন প্রবৃদ্ধিও কমতে শুরু করে। এ সুযোগে বাংলাদেশের উৎপাদকরা নিজেদের অবস্থান আরো সুসংহত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে গত বছরও জুতা উৎপাদনে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে এ প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৭ ও ১২ শতাংশ। এ তিন বছরে গড়ে ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে উৎপাদন বিবেচনায় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি উভয়ই বাড়ছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ২৯ কোটি ৮০ লাখ জোড়া জুতা উৎপাদন করে। ২০১৪ সালে এ উৎপাদন ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৩১ কোটি ৫০ লাখ জোড়া হয়। ২০১৫ সালে উৎপাদন ১২ শতাংশ বেড়ে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ জোড়া এবং ২০১৬ সালে ৭ শতাংশ বেড়ে ৩৭ কোটি ৮০ লাখ জোড়ায় দাঁড়ায়।
ফুটওয়্যার শিল্পে স্থানীয় ও রফতানি দুই বাজারেই নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে বাংলাদেশ। অভ্যন্তরীণ বাজারে বড় করপোরেটরাও নতুন নতুন ব্র্যান্ড নিয়ে আসছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি খাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সক্ষমতা শ্রমিকের মজুরি। কিন্তু পরিবেশ ও কারখানার কর্মপরিবেশের মানদ- নিয়ে আন্তর্জাতিক ভাবধারার পরিবর্তনে শুধু কম মূল্য দিয়ে ক্রয়াদেশ বাড়াতে পারছেন না রফতানিকারকরা। পরিবেশ ও কারখানার কর্মপরিবেশের মান ধরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে উৎপাদনের বিচারে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে থাকলেও রফতানিকারক হিসেবে অনেকটাই পিছিয়ে বাংলাদেশ।
সম্ভাবনার বিচারে ফুটওয়্যার শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) প্রেসিডেন্ট মো. সায়ফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ফুটওয়্যার শিল্পে শীর্ষ দেশ চীনের প্রবৃদ্ধি দুই থেকে এক অংকে নেমে এসেছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে। বৈশ্বিক বাজার বিবেচনায় নিলে বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আরো অনেক দেশ আছে। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে শিল্পটিকে আরো টেকসই রূপ দিতে হবে। সম্পাদনা : মোনা হক