পানিসংকটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল
সাহাবুদ্দিন সনু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে গত ২ মাস ধরে রোগী ও স্বজনরা পানির জন্য হাহাকার করলেও কর্তৃপক্ষের এখন পর্যন্ত টনক না নড়াই রোগীসহ স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এমনকি দৈনন্দিন ব্যবহার্য পানি স্বজনরা বাইরে থেকে কিংবা অনেক দূর থেকে সংগ্রহ করে তাদের কাজ সারছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের ২য় তলার ৪ নম্বর মহিলা কেবিনে চর পাঁকা গ্রামের সুমি খাতুন ও জান্নাতি বেগম গত ৬ দিন আগে ভর্তি হয়েছেন। তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তির হওয়ার পর থেকেই পানির সমস্যা। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেও এর কোন সমাধান হয়নি। ৫ দিন থেকে শুধু বাহির থেকে পানি নিয়ে এসে কোন রকমে চলছে। তিনি বলেন, নদী থেকে পানি এনে রোগীদের গোসলসহ টয়লেট সাড়তে হচ্ছে।
২য় তলায় গাইনি ও প্রসূতি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন, সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের আল্লাদি বেগম। পাশেই দেখা যায়, বোতল জাত কোম্পানীর পানির ৪টি বোতল, তার ছোট বোন ওই বোতলগুলো দেখিয়ে বলেন, প্রতিদিন বোতলের পানি কিনে সব কাজ করতে হচ্ছে। গাইনী ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বেডের রোগীর আত্মীয় শিবগঞ্জের বিরামপুর গ্রামের তাসলিমা বেগম জানান, তার মেয়ে ৫ দিন থেকে ভর্তি হয়েছে। পানির অভাবে গোসলও করা সম্ভব হচ্ছে না। টয়লেটের পানিও আনতে হয় বাহির থেকে। ৩য় তলার ১ নম্বর বেডে থাকা এক রোগীর আত্মীয় উজির আলী জানান, পানি পাওয়া যাচ্ছে না। নদী থেকে পানি নিয়ে আসতে হচ্ছে, যা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের স্টাফ নার্স হোসেনে আরা জানান, পানির সমস্যার কথা সকলের জানা। এমনকি আবাসিক চিকিৎসকও জানেন। কিন্তু তারপরেও কেন সমাধান হচ্ছে না বুঝতে পারছি না। ৩য় তলার মহিলা ওয়ার্ডের নার্স নাজিরা খাতুন জানান, প্রায় ২ মাস থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। কখনও কখনও অল্প পরিমানে পাওয়া গেলেও কিছুদিন থেকে তাও পাওয়া যাচ্ছে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম জানান, মূলত পাইপ লাইনে ময়লা জমে যাওয়ায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. প্রধান আবুল কালাম আজাদ জানান, পানি সংকটের বিষয়টি অবগত আছেন। গত ৩ দিন আগে গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীদের সাথে বৈঠক হয়েছে এবং দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধান হবে।