২০ চীনা উইঘোর মুসলিম পালালো থাই কারাগার থেকে
ইমরুল শাহেদ : ২০ জন উইঘোর মুসলিম থাই-মালয়েশিয়া সীমান্তের একটি কারাগার থেকে কম্বলকে মই হিসেবে ব্যবহার করে পালিয়ে গেছে। কারাগারের ভিতরে গর্ত খুঁড়ে তারা পালিয়েছে বলে জানিয়েছেন থাই কর্মকর্তারা। ২০১৪ সালে যে ২০০ জন উইঘোর মুসলিমকে এই কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল এই ২০ জন ছিল তার শেষ গ্রুপ। এই গ্রুপের কারাবন্দিরা নিজেদেরকে তুরস্কের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন এবং তাদেরকে তুরস্কে পাঠাতে বলেছিল তারা। কিন্তু ২০১৫ সালে তাদের প্রায় ১০০ জনকে জোর করে চীনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দার ঝড় উঠে। এমন কি মানবাধিকার গ্রুপগুলোও এই ঘটনার নিন্দা জানায়। কারণ চীনে তারা নির্যাতনের শিকার হতে পারে।
চীনের সমস্যাসংকুল জিনজিয়াংয়ে সংখ্যাগুরু হ্যান চীনা এবং উইঘোরদের মধ্যে সহিংসতায় গত কয়েক বছরে শত শত লোক মারা গেছে। তারা তুরস্কের ভাষায় কথা বলে। সেই সময় থেকে জিনজিয়াং থেকে দক্ষিণ এশিয়া হয়ে শত শত, সম্ভবত কয়েক হাজার লোক তুরস্কে চলে গেছেন। কারাগারের ২৫ জন উইঘোর ভাঙ্গা টাইলস ব্যবহার করে গর্ত খোদে এবং কম্বল ব্যবহার করে নাটকীয়ভাবে কারাগার থেকে পালিয়ে যায়। এই কারাগারটি থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় সোংখা প্রদেশে অবস্থিত। এ তথ্য জানিয়েছে অভিবাসী কর্মকর্তারা। তারা জানান, পলায়নের সময় পাঁচ জন ধরা পড়েছে।
পুলিশের ক্যাপ্টেন প্রসিট টিম্মাকার্ন, কারাগারের সাব-ইনস্পেক্টর বলেছেন, ‘তারা এখন স্বাধীন। প্রচ- বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের কোনো সাড়া শব্দ আঁচ করা যায়নি।’
প্রসিত বলেছেন, সীমান্তে চেকপয়েন্ট বসিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ব্যাংককের ইরাওয়ান এলাকায় একটি ধর্মীয় স্থানে পেতে রাখা বোমায় ২০ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল বিদেশি পর্যটক। এই ঘটনায় দুই জন উইঘোর মুসলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তারা এখন বিচারাধীন। কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই ঘটনাটি ঘটেছিল যখন মানবপাচারের বিষয়টি ছিল তুঙ্গে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলেছেন, চীনে জোর করে পাঠানো উইঘোরদের প্রতিশোধ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছিল। চীন সরকার জিনজিয়াংয়ের ঘটনাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের কাজ বলে উল্লেখ করেছে। মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলেছে, চীনে উইঘোরদের ধর্ম ও সংস্কৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার কারণেই তাদের মধ্যে প্রতিবাদ দেখা দিয়েছে। চীন যথারীতি জিনজিয়াংয়ে দমন পীড়ন চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন