কলকাতার বাংলাদেশ দূতাবাসে স্মারকলিপি ‘হিন্দু নির্যাতন বন্ধ না করলে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বেশিদিন টিকবে না’
মাছুম বিল্লাহ : আওয়ামী লীগকে ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশধারী উল্লেখ করে ভারতের বাংলাদেশ উদ্বাস্তু উন্নয়ন সংসদের সভাপতি বিমল মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ না করলে শেখ হাসিনা বেশিদিন ক্ষমতায় বেশিদিন টিকতে পারবে না।
রংপুরসহ বিভিন্নস্থানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে শুক্রবার কলকাতার বাংলাদেশ দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দেয়ার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন বিমল মজুমদার।
রংপুরে হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশধারী আওয়ামী লীগ ভারতের সহায়তায় ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটার পরও কঠোর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি এবং আগামী দিন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিণতির কথা ভেবে উদ্বেগে আছি। কেন না বাংলাদেশে আর কোনো দল থাকলো না সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর।’
বিমল মজুমদার বলেন, ‘বিএনপি হোক, জাতীয় পার্টি হোক বা আওয়ামী লীগ হিন্দু নির্যাতনের প্রশ্নে সকলে এক। আমরা সর্বস্তরের জনগনকে আহ্বান করছি আসুন সকলে মিলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ করি এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ সৃষ্টি করি।’
কলকাতার বাংলাদেশ দূতাবাসে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘বিএনপি-জামায়াত, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা শত অত্যাচার সহ্য করেও স্বপ্ন দেখতেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে এবং পিতৃ পুরুষের ভিটায় সম্মান নিয়ে শান্তিতে বাসবাস করবে। সেই জন্য সংখ্যালঘুরা আওয়ামী লীগকে ভোট দিত। কিন্তু বাস্তবে তারা কি পাচ্ছে? আজকে শেখ হাসিনার সরকার এভাবে আশার কবর দেবে তা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি সংখ্যালঘুরা।’
দূতাবাসের মাধ্যমে সরকারের কাছে সংগঠনটির দাবি,বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে আর নির্যাতন হবে না তার আশ্বাস দিতে হবে সরকারকে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদেরকে ক্ষতিপূরণ সহ ভবিষ্যতে জানমালের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের আমলেতো হিন্দুরা ভালো আছেন বলে ভারতের কিছু হিন্দু সংগঠন দাবি করে। তাহলে আপনারা কেন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এতো ক্ষোভ প্রকাশ করছেন?
এ প্রশ্নের জবাবে বিমল মজুমদার বলেন, ‘ভারত সরকার তথা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা মনে করছিল মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল ক্ষমতায় থাকলে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়তো হবে না। আওয়ামী লীগও যে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ক্ষেত্রে মুদ্রার এপিট-ওপিট তা প্রমাণিত হয়েছে।’
ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রংপুরের ঘটনার আগেও বাংলাদেশের নাসিরনগর, রামুতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে এবং প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশের কোনো না কোনো সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জ্বালানো, লুঠপাট, মা-বোনদের উপর অত্যাচার অব্যাহত আছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের উপর অনেক ঘটনাই প্রচারে আসে না। এই নির্যাতনের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না।এটা বাংলাদেশ হিন্দু শূন্য করার নীলনকশার অংশ মাত্র।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উদ্বাস্তু উন্নয়ন সংসদের সম্পাদক অমৃত মূখার্জি, সম্পাদক মন্ডলীর কিশোর বিশ্বাস, বিবেক দেব, উপদেষ্টা কমিটির প্রদীপন চৌধুরী প্রমুখ।