কতিপয় গোষ্ঠীস্বার্থে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে : জাতীয় কমিটি
রফিক আহমেদ : অযৌক্তিকভাবে অষ্টমবারের মতো বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন- ভুল নীতি ও দুর্নীতির কারণে, কতিপয় গোষ্ঠীস্বার্থে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। কয়েকমাস আগে গ্যাসের দামবৃদ্ধির পর গত ২৩ নভেম্বর সরকারের নির্দেশে বিইআরসি অষ্টমবারের মতো গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।
জাতীয় কমিটির নেতৃদ্বয়- গণশুনানীতে প্রদত্ত তথ্য, যুক্তি এবং প্রাপ্ত ফলাফলের বিরুদ্ধে গিয়ে, দেশের অর্থনীতি ও জনজীবনের বিষয় বিবেচনা না করে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। জাতীয় কমিটি কমদামে পরিবেশসম্মতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প মহাপরিকল্পনা উপস্থিত করা সত্ত্বেও তাতে কান না দিয়ে সরকার তার মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ খাতকে ক্রমাগত কিছু দেশি বিদেশি গোষ্ঠীর মুনাফা বানানোর খাতে পরিণত করছে। সরকার তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান স্থগিত করে এলএনজি আমদানির পথ ধরেছে। দেশ বিনাশী ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে যাচ্ছে, ব্যয়বহুল কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে সরকার।
নেতৃদ্বয় বলেন, বারবার গ্যাস-বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি অর্থনীতির জন্য বোঝা হচ্ছে, সকল পর্যায়ের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াচ্ছে। আবারও এই দামবৃদ্ধিতে সকল পর্যায়ে আরেকদফা উৎপাদন ব্যয়, বাসাভাড়াসহ অন্য সব দ্রব্যসামগ্রীর দাম ও শিল্পকৃষি পণ্যের দাম বাড়বে। সকল উদ্যোক্তার জন্যই নতুন বিনিয়োগ এতে আরও কঠিন হয়ে যাবে।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, সরকারি মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি ২০১৬) অনুযায়ী জাতীয় সক্ষমতা বিপর্যস্ত করে সরকার একদিকে সাগরের গ্যাস রপ্তানির বিধান রেখে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করছে, অন্যদিকে গ্যাস সঙ্কটের অজুহাতে সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প, ভয়ংকর ঝুঁকি ও বিপুল ঋণের রূপপুর প্রকল্পের উদ্যোগ নিচ্ছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার দরের চাইতে কয়েকগুণ বেশি দামে বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে গ্যাস কেনার চুক্তি হচ্ছে।
নেতৃদ্বয় আমরা তাই বিদ্যুতের আবারও দামবৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এছাড়া সুন্দরবনবিনাশী রামপাল ও মহাঝুঁকির ব্যয়বহুল রূপপুর প্রকল্পসহ দেশবিধ্বংসী সব তৎপরতা বন্ধ করে সুলভে পরিবেশসম্মতভাবে গ্যাস বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনার খসড়া নিয়ে আলোচনা শুরুর দাবি জানাই।