আরব চিন্তাবিদ ইবনে খালদুনকে ইউনেস্কোর নথিভুক্ত করতে তিউনিসিয়ার আহ্বান
ইমরুল শাহেদ : আরব চিন্তাবিদ ও ইতিহাসবিদ আবদুর রহমান ইবনে খালদুনের নাম ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রার’-এ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ইউনেস্কোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তিউনিসিয়া। মঙ্গলবার ফ্রান্সের ঐতিহাসিক গ্র্যাব্রিয়েল মার্টিনেজ-গ্রস ‘ন্যাশনাল হেরিটেজ অন ইবন খালদুন এ্যান্ড ইটস কনটেমপোরেরি রিডিংস’- এর এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়। এই উদ্যোগ নিয়েছিল তিউনিসিয়ার সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে মরক্কোর কাসাব্লাংকায় গত ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় পার্মানেন্ট কমিশন ফর আরব কালচার অব দি ইসলামিক এডুকেশনাল, সায়েন্টেফিক এ্যান্ড কালচারাল অর্গেনাইজেশন (আইএসইএসসিও)-এর আলোচনা সভা। ইবনে খালদুন ‘আল-মুকাদ্দিমা’ রচনা করেছেন ১৩৭৭ সালে। তিনি নিজের অভিজ্ঞতালব্ধ ধর্মতত্ত্ব, রাজনৈতিক বিজ্ঞান, প্রকৃতি বিজ্ঞান এবং জীববিদ্যা তাতে লিপিবদ্ধ করেছেন। বইটিতে তিনি আরব সাম্রাজ্যের উত্থান ও পতন নিয়ে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা করেছেন। মিডলইস্ট মনিটর
আধুনিক চিন্তাবিদরা মনে করেন, এই বইটি সমাজবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পথ প্রদর্শক বা সেই সময়ের আলোকে আজকের অর্থনীতি। প্রথম আল-মুকাদ্দিমা তুরস্কের ভাষায় অনূদিত হয় ১৭৪৯ সালে । তখন ছিল অটোমান সাম্রাজ্য। অনুবাদ করেছেন শেখ এল ইসলাম পীরজাদা। ইবনে খালদুন সম্পর্কে পাশ্চাত্য জগত জানতে পারে ১৭ শতাব্দির দিকে। এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা নেন বার্থেলেমি হার্বেলট ডি মোলেইনভিলে। বুক অব এক্সামপল্স এবং বুক অব কনসিডারেশনস অন দি হিস্টরি অব দি আরবস, পার্সিয়ানস এ্যান্ড বারবার্স লিখা হয় ১৩৭৫ থেকে ১৩৭৯ সালের মধ্যে। সেগুলো লেখা হয়েছে ইবনে খালদুনের আল-মুকাদ্দিমাকে মাথায় রেখেই।
ইবনে খালদুন তিউনিসিয়ায় জন্ম গ্রহণ করেন ১৩৩২ সালে। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক, কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী এবং লেখক। তিনি বেনি খালদুন বংশের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান এবং কয়েক শতাব্দী ধরে তারা বাস করতেন স্পেন অঞ্চলের সেভিলে ও আন্দালুসিয়ায়। এই সময়ে তার পরিবার ছিল উক্ত অঞ্চলের ৩ প্রভাবশালী পরিবারের একটি। আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন, তার পরিবার এসেছিল বেদুইন সম্প্রদায় থেকে। এই সম্প্রদায়টি ইয়েমেনের হার্ডরামাউন্ট অঞ্চলে বাস করত। সে সময় অষ্টম শতাব্দিতে মুসলিম বিজয়ের সময় তার পরিবার স্পেনে চলে যায়। সেখান থেকে স্পেন পুনর্বিজয়ের শুরুর দিকে বেনি খালদুন পরিবার ১৩ শতাব্দির দিকে উত্তর মাগরেব অঞ্চলের সেবতায়। এরপর ১২২৮ সালে তিউনিসিয়ায় বসবাস করতে শুরু করে। তিনি ১৪০৬ সালের ১৯ মার্চ মিসরে মারা যান। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন