বাংলাদেশের উন্নয়নে অভিবাসী শ্রমিকদের অবদান অনেক বেশি ওয়ালিউর রহমান
অভিবাসী দিবসটি এই বছর বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্ব বহন করছে। কারণ হচ্ছে রোহিঙ্গা। যদিও তারা সেই কাতারে পড়ে না। তবুও এখন তারা আমাদের কাছে অভিবাসীর মতো। তারা মিয়ানমার থেকে অত্যাচারিত হয়ে, লাঞ্ছিত হয়ে, গুলিবিদ্ধ হয়ে, ধর্ষিত হয়ে আমাদের দেশে রিফুজি হিসেবে ফালিয়ে এসেছে। তারা এই দেশে আসার একটাই কারণ জীবন বাঁচানো। অভিবাসী বলতে আমরা সাধারণত, অর্থনৈতিক উদ্দেশে এক দেশ থেকে অন্যদেশে যাওয়া বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যাওয়াকে বুঝি। আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ রোগিঙ্গা এসেছে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে থাকার সকল ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু বিদেশী সংস্থাও সহযোগিতা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি করেছেন মানবিক দিক বিবেচনা করে, মানবতার দিক বিবেচনা করে। যার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে তার নাম দেওয়া হয়েছে, মাদার অব হিউমেনিটি। যদিও আমাদের দেশেও কিছু সমস্যা আছে। তবু তিনি বলেছেন, আমরা যদি খাই রোহিঙ্গারা খাবে। এখন অভিবাসীর বিষয়টি বলতে গেলে, আমরা ১৬২টি দেশে অভিবাসী পাঠিয়েছি। বিভিন্ন দেশে আমাদের দেশের অভিবাসী শ্রমিকরা কাজ করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে এই শ্রমিকদের অবদান অনেক বেশি। আমাদের বর্তমান সরকার অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য কাজ করছে। তিনি যারা বিদেশ যেতে চান তাদের জন্য একটি ব্যাংক করেছেন। সেখান থেকে ঋণ নিয়ে তারা বিদেশ যেতে পারছে। বিদেশে শ্রমিকদের সকল সুবিধা-অসুবিধা দেখছেন। কূটনৈতিকভাবে সকল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। আমরা সবচেয়ে বেশি সংখ্যাক অভিবাসী শ্রমিক পাঠিয়েছি বিভিন্ন দেশে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ ভালো ভালো অনেকগুলো দেশে প্রায় ১ কোটি অভিবাসী শ্রমিক কাজ করে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন দেশে সরকারীভাবে শ্রমিক পাঠাচ্ছে। তাদের বিদেশ যাওয়ার জন্য এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দিচ্ছে। ২০০০ সালের ডিসেম্বরের ৪ তারিখ আন্তর্জাতিক অভিবাস দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই দিনটি আমাদের জন্য একটি বিশেষ দিন। কারণ অভিবাসী শ্রমিকের পাঠানো রেমিটেন্সে আমাদের ব্যাংক রিজার্ভ বছর বছর বাড়ছে। তারা দেশের গর্ব। আমাদের সরকার যদিও অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য কাজ করছেন। এখন দেশ থেকে শ্রমিক দের বিভিন্ন কাজের উপর দক্ষ করে পাঠানো হচ্ছে। আমাদের টার্গেট হচ্ছে, ৫০ ভাগ শ্রমিক অদক্ষ আর বাকি ৫০ ভাগের ১৫ ভাগ আধা দক্ষ ৩১ ভাগ দক্ষ এবং ২.৫ ভাগ পেশাদার পাঠাতে চেষ্টা করছি। আমাদের দেশের শ্রমিকরা বিভিন্ন দেশে গিয়ে সুনামও করছে। যেমন: কাতারে ৪ লাখ, ইতালিতে ৬ লাখ বাঙালি শ্রমিক আছে। তারা কাজের মাধ্যমে আমাদের দেশের সুনাম করছে। তবে কিছু কিছু অভিবাসী শ্রমিক দেশে টাকা পাঠাচ্ছে না। বিশেষ করে যারা লন্ডন থাকে তারা। তারা ঐ দেশে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য করে সেখানেই বসবাস করছে। যদিও কিছু টাকা পাঠায়, তারা সিলেট পাঠায়। তবে ইতালি থেকে প্রতিবছর বড় একটি এমাউন্ট আমাদের দেশে আসে। এভাবে সব দেশ থেকেই আমাদের দেশের শ্রমিকরা টাকা পাঠাচ্ছে। তাই সরকার তাদের জন্য কাজ করছে। আশা করি সরকার তাদের আরও সুযোগসুবিধার দিকগুলো দেখবে।
পরিচিতি : সাবেক কূটনীতিক
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন