শাকিল আহমেদ : রাজধানীর একই রুটে চলা একেক কোম্পানির বাস একেক হারে ভাড়া আদায় করছে। ঢাকার ৯৫-৯৬ শতাংশ বাস-মিনিবাস অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নৈরাজ্যের সাঙ্গে জড়িত। গণপরিবহনে অতিরিক্ত বাস ভাড়া বাবদ একজন যাত্রীকে মাসে ৩০০-৯০০ টাকা ব্যয় করতে হয়, যা প্রতি মাসে জনপ্রতি গড়ে প্রায় ৫০০ টাকা।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-সহ মোট ১৭টি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ‘রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনের নৈরাজ্য বন্ধ কর’ এই দাবিতে মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের পাশাপাশি সিটিং সার্ভিসের নামে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অধিক মুনাফার লোভে অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত আসন স্থাপন করা হয়। বছরের পর বছর চলতে থাকা বিভিন্ন অনিয়মের জন্য মূলত বিআরটিএ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন, গণপরিবহন মালিক, চালক ও শ্রমিক সকলেই দায়ী।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি বাস ২০ শতাংশ আসন খালি নিয়ে চলবে -এমনটা ধরেই ভাড়া ঠিক করা হয়েছে। ফলে আলাদা করে সিটিং সার্ভিস চালু রাখা ও আলাদা ভাড়া নির্ধারণ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। মালিকেরা চান অধিক মুনাফা। তাই সবার আগে প্রয়োজন মালিকদের মানসিকতায় পরিবর্তন। এছাড়াও ঢাকায় মহানগরীর ৮০ শতাংশ বাস-মিনিবাসের চালকের বৈধ লাইসেন্স নেই।
বক্তারা বলেন, ঢাকায় শতকরা ৯৩-৯৪ ভাগ মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে পায়ে হেঁটে, বাসে বা রিক্সায়। মাত্র ৬-৭ ভাগ মানুষ প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহার করে। প্রাইভেট গাড়িগুলো ঢাকার রাস্তার শতকরা ৬৫ ভাগ দখল করে রাখে।
পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনের সুপারিশসমূহ : রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ বিভিন্ন ধরনের নৈরাজ্য বন্ধে বিআরটিএ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃক সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। রাস্তার মাঝখান, রাস্তার মোড় ও সিগনালে বাস থামিয়ে রেখে অন্যান্য যান চলাচলে বাধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা। বাস-মিনিবাসের ইঞ্জিন, বডি, আসন, জানালা ও দরজা নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য মালিকদেরকে বাধ্য করা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা কর্তৃক তা তদারকি করা। বিআরটিসিসহ বেসরকারি বাস সার্ভিস কর্তৃক সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা।