পরিকল্পনা আর ভোগান্তিতে আরও একটি বছর পার ঢাকাবাসীর
শাকিল আহমেদ: আধুনিক ও বাসযোগ্য শহরে রুপান্তরিত করতে বছরের শুরুতে নানা পরিকল্পনা নিয়েছিলো ঢাকার দুই সিটি মেয়র। তবে বিদায়ী বছরে তেমন কোন অর্জন দেখছেন না নগর বিশেষজ্ঞরা। উন্নয়ন পরিকল্পনা আর ভোগান্তিতে আরও একটি বছর পার হলো ঢাকাবাসীর।
২০১৭ সালের নগরবাসী প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি সম্পর্কে নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, নির্বাচনের পর গত বছর ছিলো দুই মেয়রের প্রস্তুতির বছর। আনিসুল হকের নেয়া পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি ছিলো নগরবাসির একমাত্র পাওয়া। বিদায়ী বছরের শুরুতে যে সম্ভাবনা ছিলো তা আনিসুল হকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে গেছে। নগরবাসির আশার প্রতিফালন হয়নি। অণ্যদিকে দক্ষিন সিটি করপোরেশনের উপর দেয়া ১৬ টি ইউনিয়নের কাজের কোন মাষ্টার প্লান নেই। রয়েছে লোকবল সংকট। এত অল্প লোকবল দিয়ে কোন ভাবেই ভালো সেবা দেয়া সম্ভব নয়। ডিএসসিসির কাজের গতি নিষ্কৃয় হয়ে আসছে। অনেক প্রতিশ্রুতিই রাখতে পারেনি মেয়র খোকন। তাই নতুন বছর দুই সিটির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সব শেষ তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি থেকে প্রত্যয়। প্রত্যয় থেকে যেন পতন না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
হকার উচ্ছেদ: চলতি বছরের শুরুতে হকার উচ্ছেদ করে নগরীর ফুটপাত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। এতে হকারদের সঙ্গে কয়েক দফা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মেয়রের সমর্থক ও করপোরেশনের কর্মকর্তারা। তবে গুলিস্থান, পল্টন, মতিঝিল, নিউমার্কেট এলাকায় এখনো হকারদের উপস্থিতি রয়েছে চোখে পড়ার মতো।
ফিটনেস বিহীন গাড়ীর বিরুদ্ধে অভিযান: বছরের শুরুতে লাইসেন্স বিহিন ও ২০ বছরের পুরনো গাড়ী বন্ধে কিছু দিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও আলোর মুখ দেখেনি এ অভিযান।
চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব: বছরের মাঝামঝি সময় পুরো রাজধানীতে মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়ার মহামারি আকার ধারন করে। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় দুই মেয়রকে। এর প্রেক্ষিতে ডিএনসিসি নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক বলেন, তার পক্ষে ঘরে ঘরে গিয়ে মশারি টাঙিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। মেয়রের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন নগরবাসী। পরে তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন মেয়র।
জলাবদ্ধতা ও খোঁড়াখুঁড়ি: বছরের প্রথমদিকে শুরু হয় ড্রেন, সড়ক ও ফুটপাত সংস্কার, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। রাস্তার দুপাশে সমানতালে চলে উন্নয়নের খোড়াখুড়ি। মার্চ থেকে টানা বৃষ্টিতে রাজধানীতে হাঁটু পানি হয়। মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ করতে গিয়ে পুরো এলাকা যানজটও ধুলার সাগরে পরিণত হয়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তথ্য মতে, ৬৫০ কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা।
হোল্ডিং ট্যাক্স: বছরের শেষের দিকে রাজধানীর হোল্ডিং ট্যাক্স সমন্বয় করার উদ্যোগ নেয় দুই সিটি করপোরেশন। কর্তৃপক্ষ সমন্বয় করার কথা বললেও অস্বাভাবিক হারে ট্যাক্স বৃদ্ধির অভিযোগে আন্দোলনে নামেন বাড়ির মালিকরা। এর প্রেক্ষিতে হোল্ডিং ট্যাক্স সমন্বয় কাজ স্থগিত করে সরকার।