অপহরণ-গুম-খুন ও রাজনীতি মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম
গত চার বছর সরকার দেশের জনগণকে কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পেরেছেন? ১৬ কোটি জনগণের নিরাপত্তার একটি স্বাভাবিক মাত্রা আছে। আবার অনিরাপত্তারও একটি আঙ্গিক আছে। বাংলাদেশের জনগণের বিরাট অংশ অনিরাপত্তায় ভুগছে। এক প্রকার অনিরাপত্তা হচ্ছে অলিখিত ভাবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অপহরণ-গুম-খুন। দ্বিতীয় প্রকার অনিশ্চয়তা হচ্ছে, আপনার ইজ্জত, আপনার সম্মান রক্ষিত হবে কি-না? আপনার সম্পদ লুটেরাদের হাত থেকে রক্ষা পাবে কি-না? একটা দেশের নিরাপত্তার কথা যখন মানুষ বলে, তখন শুধু একটা মানুষকে বাঁচাল কি-না সেটা নিরাপত্তা নয়। এই তিনটি আঙ্গিকের পর আমি তুলে ধরব, সরকার আরও অনেক বিষয়ে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার অন্যতম আঙ্গিক তিস্তার পানি আনতে পারেনি। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারেনি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে (যেখানে রোহিঙ্গারা) মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্তৃক আকাশ সীমা লঙ্ঘনের বিহীত করতে পারেনি। আকাশ সীমা লঙ্ঘনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিঘিœত হয়েছে। আপনারা যদি প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত চার বছরে বাংলাদেশের মানুষকে কতটা নিরাপত্তা দিতে পেরেছে, আমি বলব, তিনি নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক। রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য নিজেরাই অনিরাপত্তার উৎস। তারা ছিনতাই ও মাদকের সাথে জড়িত, এ রকম খবর গণমাধ্যমে এসেছে। আমার পক্ষ থেকে আমি বলব, নিরাপত্তা প্রদানে বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ। যে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অপহরণ হয়েছে, তার পেছনে সরকারের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে মনে করি। আমাদের কোনো গোয়েন্দা বাহিনী নেই। তাই আমরা তদন্ত করে বলতে পারব না, সরকারি কোনো তদন্তকারী সংস্থা এ সকল কাজ করছে না। ব্যবসায়ী অপহরণে সিন্ডিকেট জড়িত বলে মনে করি। এটাও সরকারের ব্যর্থতা। সরকার যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারে, এর দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। জঙ্গী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়েও সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
পরিচিতি : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ