সুজন কৈরী : রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ার রুবী ভিলার জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানে নিহত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তিন সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা (নম্বর ১০) হয়েছে। গতকাল শনিবার তেজগাঁও থানায় র্যাব বাদী হয়ে এ মামলা করে।
এদিকে গুলির আঘাতেই ৩ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ এম সেলিম রেজা।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরানুল হাসান বলেন, সন্ত্রাস দমন আইনে অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়েছে। নিহতদের নাম-পরিচয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জানার চেষ্টা চলছে। র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই বাড়ির মালিক সাব্বির হোসেন, তৌহিদ নামের এক মেস মেম্বার, বাড়ির কেয়ারটেকার রুবেল ও মেসে খাবার সরবরাহকারী শীতলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল শনিবার বিকালে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তৌহিদ এলাহীর উপস্থিতিতে নিহত তিন জঙ্গির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ এম সেলিম রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ৩ জনের শরীরেই বুলেটের চিহ্ন আছে। গুলিতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল প্রতিবেদন যে আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা সেই আঘাতগুলো পেয়েছি। একজনের শরীরে একটি বুলেট পাওয়া গেছে। তাদের প্রত্যেকের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের সামনে ও পেছনের দিকে এসব আঘাত রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে অধ্যাপক সেলিম রেজা বলেন, বিষয়টি রাস্ট্রীয়ভাবে অত্যন্ত গোপনীয়। সব তথ্য জানানোর বিষয়ে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমি বিস্তারিত আমার প্রতিবেদনে লিখবো।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পশ্চিম নাখালপাড়ার ১৩/১ নম্বরস্থ রুবী ভিলার পঞ্চম তলায় অভিযান চালায় র্যাব। এক পর্যায়ে বাড়ির ভেতর থেকে গুলিবর্ষণ ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে ভেতর থেকে ৩ জঙ্গির লাশ উদ্ধার করা হয়। ৬ তলা ওই বাড়ির মালিক সাব্বির রহমানের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে।
র্যাব জানিয়েছে, তিনি বিমান বাহিনীর ফ্লাইট অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ির পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলা মেস হিসেবে ভাড়া দেওয়া ছিল। জানা গেছে, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল জঙ্গিরা।
গতকাল ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িটির নিচে কয়েকজন র্যাব সদস্য রয়েছেন। পাঁচ তলায় কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়াদেরও আসা-যাওয়া রয়েছে র্যাব সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে। পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে কাউকেই প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছেনা। পালাক্রমে র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
বাড়ির তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া সাহেরা মতিন জানান, তিনি ওই বাড়িতে গত ছয়-সাত মাস আগে উঠেছেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাড়িটি ছেড়ে দিবেন। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম