সিনেটে বাজেট পাস না হওয়ায় অচল মার্কিন সরকার
পরাগ মাঝি : সিনেটে বাজেট আটকে যাওয়ায় মার্কিন সরকার অচল হয়ে পড়েছে। অভিবাসন ও সরকারি ব্যয় সংক্রান্ত বিলে ঐক্যমতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় ডেমোক্রেটদের বিরোধিতায় সিনেটে আটকে যায় বাজেট বরাদ্দ বিল। এই ইস্যুতে সিনেটে ভোটের ব্যবধান ছিলো ৫০-৪৯। বিলটি পাসের জন্য সিনেটে ৬০টি ভোটের প্রয়োজন ছিল। শুক্রবার গভীর রাতের ওই নাটকীয়তার পর অচল মার্কিন সরকারি অনেক কার্যক্রম। চতুর্থবারের মতো ‘শাট ডাউন’ হল যুক্তরাষ্ট্রে।
সরকারি কার্যক্রম বন্ধের এই বিল ডেমোক্রেট শিবির এমন এক দিনে আটকে দিলো যার ঠিক এক বছর আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন রিপাবলিকান দলীয় ডোনাল্ড ট্রাম্প। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ওবামার শাসনামলে টানা ১৬ দিন জরুরি সেবা ছাড়া মার্কিন সরকার অচল হয়ে পড়েছিল।
ইতিমধ্যে মার্কিন ফেডারেল সরকার অনেক দপ্তর বন্ধ করে দেয়া শুরু করেছে। এতে অনেক কর্মী ছুটি কাটাতে বাধ্য হবেন। বিবিসি, আল-জাজিরাএ
তবে জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ চলবে। যার মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা, ডাক, বিমান ওঠা-নামার কাজ, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সেবা, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে সেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কারাগার, কর বিভাগ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন অন্যতম।
বন্ধ হয়ে যাবে জাতীয় উদ্যান এবং স্মৃতিস্তম্ভগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ; ওবামার আমলে যা নিয়ে জনরোষ দেখা দিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম হোয়াইট হাউজ ও কংগ্রেস একই দলে নিয়ন্ত্রণে থাকার পরও সরকারের বাজেট বাড়ানোর বিল অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হলো।
সরকারি এই অচলাবাস্থার জন্য ডেমোক্রেট সদস্যদের দায়ী করে তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। টুইটারে এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘কর হ্রাসের সাফল্য খর্ব করতেই ডেমোক্রেটরা এই অচলাবস্থা চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের রক্ষার জন্য আমি বৈধ নাগরিকদের স্বার্থ নষ্ট হতে দেবো না।’
সরকারের অচলাবস্থা এড়াতে ডেমোক্রেটদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করে রিপাবলিকান সিনেটররা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিনেটে ডেমোক্রেট দলীয় নেতা চাক শ্যুমারের সঙ্গে বৈঠক করেন। একেবারে শেষ সময়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরও আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের ব্যয় পরিচালনার বিলটিতে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট মেলেনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকার পরিচালনার ব্যয় নির্বাহের একটি বিল প্রতিনিধি পরিষদে ২৩০-১৯৭ ভোটে অনুমোদন পেয়েছিলো।
গত ২৫ বছরের মধ্যে চতুর্থবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রম বন্ধের এ ঘটনা ঘটলো শুক্রবার রাতে। তবে সমঝোতায় না পৌঁছানো পর্যন্ত দেশটির সামরিক কার্যক্রম, সীমান্ত অভিযান, আকাশ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, এফবিআইসহ সরকারের জরুরি বিভিন্ন অফিস ও সেবা চালু থাকবে।
রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে আলজাজিরার প্রতিনিধি প্যাটি কুলহ্যান জানিয়েছেন, বিকল্প একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য সিনেটররা এখনো কাজ করছেন। সম্পাদনা: ইকবাল খান।