সরকার-আদালত মুখোমুখি, মালদ্বীপে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা
মাছুম বিল্লাহ : আদালত-সরকার দ্বন্দ্বে উত্তেজনার মধ্যে মালদ্বীপে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্টের সহযোগী আজিমা শাকুর।
তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটকের ক্ষমতা দেওয়া হলো। পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হলো। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম মুয়াজ আলিও এ খবর নিশ্চিত করে বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫৩-তে দেওয়া প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বলে গতকাল সোমবার থেকে আগামী ১৫ দিনের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। অনুচ্ছেদ ২৫৭ অনুযায়ী, জরুরি অবস্থা জারির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সঙ্কট সমাধানের উপায় প্রস্তাব করে তা পার্লামেন্টে উপস্থাপন করতে হবে।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট গত বৃহস্পতিবার বন্দী সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বিরোধীদলীয় নেতাদের মুক্তির আদেশ দেন। এ ছাড়া বহিষ্কার করা ১২ জন আইনপ্রণেতাকে স্বপদে ফিরিয়ে আনার আদেশও দেন আদালত। এই ১২ জন আইনপ্রণেতার ওপর থেকে বহিষ্কারাদেশ ফিরিয়ে নেওয়া হলে ৮৫ সদস্যের আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে মালদ্বীপের বিরোধীদল। কিন্তু ইয়ামিন সরকার এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করে গত শনিবার পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করে। আদালতের ওই নির্দেশ অমান্য করায় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে অভিশংসন বা গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন-এমন কথা প্রচার করেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল জানান। সুপ্রিম কোর্ট যদি এমন রায় দেন তবে তা অমান্য করতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে আগাম নির্দেশও দিয়ে রাখেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। চলমান অচলাবস্থার মধ্যে গত রোববার দ্বীপ দেশটির পার্লামেন্ট ঘিরে রাখে সেনাবাহিনী। একই দিন সকালে পার্লামেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল আহমেদ মোহাম্মদ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
চলমান এই অচলাবস্থার মধ্যে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করলেন। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করলেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। এর আগেও ২০১৫ সালের নভেম্বরে তিনি জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেন। তাকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এনে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছিলেন।