আমরা আসলে মাতৃভাষাকে ভালোবাসি না! সোহেল রানা
বইমেলা আমাদের জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। আমরা নিজেদের আত্ম পরিচয়টাই হারিয়ে ফেলেছি। মাতৃ ভাষার জন্য আর কোনো জাতি প্রাণ দেয়নি, আমরা দিয়েছি। যার স্মরণে আমরা প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারী মাতৃভাষা দিবস পালন করি। মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করেই বইমেলার উদ্ভব। এখন বইমেলাটা আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে আদর্শগত, নীতিগত কোনো কিছুই এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ ফেব্রুয়ারী মাস আসলেই আমরা সবাই মোটামুটি বাঙালি হয়ে যাবার চেষ্টা করি। আমরা যে ভাষাকে ভালোবেসে জীবন দিয়েছি, এ কথাটা এখন মিথ্যে কথা বলে মনে হয়। যে জাতি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে, সে জাতি এমন হতে পারে না। ভারতে তামিল নাড়–তেই যদি যাওয়া যায়, সেখানে দেখা যায় রাস্তাঘাট, দোকানের সাইনবোর্ড তাদের নিজস্ব ভাষায় লেখা, হিন্দি ভাষায় নয়।
যদিও হিন্দি ওদের রাষ্ট্রভাষা। আর আমাদের এখানে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হওয়ার পরও দোকানের নাম ইংরেজিতে। লন্ডন কাবাব হাউজ, মক্কা-মদিনা রেষ্টুরেন্ট, দিল্লি হাউজ, হোটেলগুলো সব ইংরেজিতে। আমরা যারা কথা বলি, বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে সর্বত্রই ইংরেজির প্রচলন। আমরা আসলে মাতৃভাষাকে ভালোই বাসি না । বাংলা ভাষা যে টুকু দেখা যায়, সেটা যারা দেশকে অনেক ভালোবাসে তাদের বদৌলতে। কাজেই আজকে আমরা শুধু কথা দিয়ে মাতৃভাষা বলছি। কথা দিয়ে মাতৃভাষাকে সম্মান করছি। সকাল বেলা গান গাওয়ার জন্যে। আসলে মাতৃভাষার প্রতি আমাদের কোনো ভালোবাসা নেই। এখন আমরা যে ভাষায় কথা বলি, সেটা বাংলা ইংলিশ মিশ্রিত একটি ভাষা বাংলিশ হয়ে যাচ্ছে। একুশে ফেব্রুয়ারী তার যে আভিজাত্য ছিল, সেটা আস্তে আস্তে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এখন দুধের সাথে পানি মিশ্রিত হয়ে এটা এখন দুধের পানি হয়ে গেছে। দুধের সাদা রঙটাই আছে শুধু মাত্র। পরিচিতি : চলচ্চিত্র অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা/ মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ/সম্পাদনা : গাজী খায়রুল আলম