নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম
হুসাইন মাহমুদ
বিশ্বভুবন যখন জাহিলিয়্যাতের আচ্ছন্ন অশান্ত ধরনির চারিদিকে হাহাকার, আর এই হাহাকার বাতিল শয়তানিয়্যাতের। এদের দুর্দান্ত দাপট এ পৃথিবী মুহ্যমান, ভয়ংকর নারী জাতির অবস্থান। অথচ মহান সৃষ্টিকর্তার রহস্যময় সৃষ্টি দ্বারা সুসজ্জিত এনিখিল বসুন্ধরা। এ ধরাকে আল্লাহপাক সুশোভিত করছেন সৃষ্টি দ্বারা, আর মানুষকে সর্বোত্তম জাতি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। মানব জাতিকে নর-নারী দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। এ বিভক্তি সত্বেও নৈতিকতার দিক থেকে উভয়ের মাঝে কোন বিভেদ রাখেননি। এই মর্মে কুরআনে এরশাদ হয়েছে, তারা তোমাদের পোশাক স্বরূপ, আর তোমরা তাদের পোশাক স্বরূপ (বাকারা ১৮৬) । অতএব, সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে নারী ও পুরুষের মধ্যে মানুষ হিসেবে কোনো বিরোধ নেই কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, যে ইসলাম নারীকে সম্মান মর্যাদা স্বাধীনতা ও অধিকারের সুউচ্চ আসনে স্থান দিয়েছেন।
ইসলামের বিধি-নিষেধেরর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাস্তায় নেমেছে বিভিন্ন অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তারা। আর বল্গাহীন ঘোড়ার মত যেখানে সেখানে নিজের খেয়াল-খুশি মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে লাজ -লজ্জার মাথায় পদাঘাত করে তারা বের হয়ে এসেছে পথে ঘাটে, স্বামীর চোখে ধুলো দিয়ে ধর্মের বিভাগ লঙ্ঘন করে পিতা-মাতা স্নেহ – মায়া পরিত্যাগ করে বখাটে যুবকদের হাতে হাত রেখে অবাধে চলাফেরা করে যাচ্ছে। এটাই কি নারী স্বাধীনতা?! অথচ এতে নারীরা তাদের স্বাধীনতা লাভ তো দূরের কথা বরং তারা তাদের স্বাধীনতার নামে মান-সম্মান সবই হারাচ্ছে। লাঞ্চিত- বঞ্চিত হচ্ছে পথে পথে । ধর্ষণ -অপহরণ ,এসিড নিক্ষেপ ইত্যাদি শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এহেন পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কেন নারী আজ অধিকার বঞ্চিত – লাঞ্চিত, নির্যাতিত। আর ইসলামই বা নারীর কি অধিকার দিয়েছে…? অন্ধকার যুগে যে নারীকে ঘৃণাভরে জীবিত কবরস্থ করা হতো, সে নারীকে ইসলাম শুধু বাঁচার অধিকার দিয়েই ক্ষান্ত হননি বরং করেছে তাকে মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অধিষ্ঠিত। করেছে অতুলনীয় ভূষণে ভূষিত। নারীর জন্মের সূচনালগ্ন হতেই জীবন যবনিকা পর্যন্ত প্রতিটি পর্বেই ইসলাম তাকে অধিকার দিয়েছে.। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন যার প্রথম সন্তান কন্যা সে সীমাহীন বরকতের অধিকারী। এমনিভাবে রাসূল (সা.) আরো ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর নিকট প্রিয় সে আল্লাহর নিকট প্রিয়। মহানবী (সা.) পিতার অন্তরে কন্যসন্তানের প্রতি গভীর মমত্ববোধ জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে বহু উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যে তিনটি কন্যাসন্তান অথবা তিন বোন প্রতিপালন করলো, তাদের শিষ্টাচারিতা শিক্ষা দিলো এবং তাদের প্রতি দয়া করলো, অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তাদের মুখাপেক্ষীহীন করে দিলেন। তাহলে তার জন্য আল্লাহ জান্নাত অবধারিত করে দেবেন। তখন জনৈক সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! দুটি কন্যা প্রতিপালন করলেও? তিনি উত্তরে বললেন, দুটি করলেও- (শারহুস সুন্নাহ, সূত্র : মিশকাত, পৃ. ৪২৩)।
স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়ে ওঠে যে ইসলাম নারীর সঠিক ও সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে নারীর স্বাভাবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম এর কোন বিকল্প নেই। কিন্তু তথাকথিত প্রগতিশীল নারীরা ইসলামের এই অসাধারণ নারী মূল্যায়নকে তুচ্ছ মনে করেছে তাই আসুন গন্তব্যহীন ধ্বংসের দিকে চলমান এই নারী সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসে তাদের সঠিক বুঝ দান করার চেষ্টা করি…আমীন….।