শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে যেভাবে
মিযানুর রহমান জামীল
ইসলাম এসেছে শান্তির বার্তা নিয়ে। সুষ্ঠু সমাজ বিণির্মাণে ইসলামের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমান দেশের এই নাজুক মুহূর্ত কিছু মানুষের পাপের বিষফল। কেউ যদি পাপ করে তা বারণ করা বা বাধা না দেয়া হলে গোটা জাতির উপর তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে। ফলে মানুষের অন্তর থেকে মানুষের দয়া-মায়া চলে যায় আর তখনই ঘটতে থাকে খুনাখুনি, হামলা-মামলা ও জুলুম অত্যাচার। তখনই শান্তির রাজ্যে জ্বলে ওঠে আশান্তির দাবানল। জাতীয় জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ ভয়ানক। বিপণœ হয়ে যায় মানুষের জান-মাল। মানব সমাজে নেমে আসে অনাকাক্সিক্ষত আজাব-গজব।
এ জন্য কোরআনের বিধান অনুযারী জীবন পরিচালনা করা অপরিহার্য। আল্লাহ রাসূলের এ কথাগুলির বিপরীত করলে ঈমান থাকবে না এবং পরকালে তার জন্য থাকবে বিভীষিকাময় আজাব। কারণ আল্লাহ তাআলা সুরা জ্বীনের ২৩ নং আয়াতে বলেন, ‘যাহারা আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলকে অমান্য করে তাহাদিগের জন্য রহিয়াছে জাহান্নামের অগ্নি, সেথায় তাহারা চিরস্থায়ী হইবে।’ ইসলামের বিধান মৌলিকভাবে পাঁচ প্রকার। ১/ আকীদা বিশ্বাস, ২/ ইবাদত-বন্দেগী, ৩/ মুআমালা (লেনদেন), ৪/ মু’আশারা, ৫/ আখলাক বা চরিত্র গঠন। আর যে ব্যক্তি পূর্ণরূপে নিষ্ঠার সাথে ইসলামের প্রতিটি বিধান পালন করবে ও সর্বক্ষেত্রে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলবে, সেই পূর্ণাঙ্গ ও খাঁটি মুসলিম। কাজেই ইসলামের কোনো একটি বিধানও লঙ্গন করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে মহাগ্রন্থ আল-কোরআন ও বিশ্বনবীর উপর ঈমান আনার ব্যাপারে সূরা আলে ইমরানের ৫৯ নং আয়াতের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি যাহা অবতীর্ণ করিয়াছ তাহাতে আমরা ঈমান আনিয়াছি এবং আমরা এই রাসূলের অনুরসরণ করিয়াছি সুতরাং আমাদিগকে সাক্ষ্য বহনকারীদের তালিকাভুক্ত করো।’
আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের অবস্থাই তেমন ভালো না। ভাইয়ে-ভাইয়ে, গোত্রে-গোত্রে, ঝগড়া-ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামার অনুসঙ্গ বেঁধে দেয়ার মাধ্যমে নেপথ্যে শয়তানের ভূমিকা পালন করছে শত্ররা। উম্মাহর এ পরিস্থিতি এখন আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। হাদীসে বলা হয়েছে, ‘মুসলমানকে গালি ফাসেকী, হত্যা রা কুফুরি।’ অন্য হাদীসে এসেছে, ‘মুসলমান মুসলমানের ভাই।’ এ ক্ষেত্রে ‘কোনো মুসলমানের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ, বলেও নির্দেশনা এসেছে। অথচ সেখানে আমাদের সমাজে ভাইয়ে ভাইয়ে সংগঠিত হত্যা, জুলুম, জবর-দখল লুণ্ঠন, পাপাচারের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এর যথাবিহীন ফায়সালা একমাত্র কুরআনই দিতে পারে। কারণ পবিত্র কুরআনই আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ।
বিজ্ঞানী জেল কার্গেন কক বলেছেন, ‘পৃথিবীতে যদি কোনো আদর্শ অমর হয়ে থাকে তবে তা একমাত্র কুরআনের আদর্শ। সমাজ জাতির এই দূর্দিনে মুসলিম উম্মাহর জীবনে আল-কুরআনের সমাজ গড়াই হোক আমাদের অঙ্গিকার। শান্তি ও সমৃদ্ধির সেতুবন্ধন রূপে প্রতিভাত হোক গোটা সমাজ। ইসলামের সৌরভে সুরভিত হোক প্রতিটি অন্তর। হেদায়েতের আলোকচ্ছাঁয় উদ্ভাসিত হোক মানবন্তর। আলোকিত হোক আমাদের এ বিশাল রাজ্য। এই প্রত্যাশাই করি। আমিন।