ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ বললে কি হয়?
মাওলানা আবদুল্লাহ জামিল
ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ, যাকে বলা হয় সে জানে যে তার অবদানকে মূল্যায়ন করা হলো। ‘জাযাকাল্লাহু খাইর’ বললে কিন্তু মূল্যায়ন করাও হয়, পাশাপাশি উপকারী ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দুআও করা হয়। ‘জাযাকাল্লাহু খাইর’ মানে হচ্ছে ‘আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন’, কি সুন্দর দুআ। কেউ কোন উপকার করলে আমরা মাঝে মাঝে বলি, কিভাবে যে ধন্যবাদ দেব বা আপনাকে কিভাবে প্রতিদান দেব বুঝতে পারছি না। সহজ উপায়, তার জন্য দুআ করুন ‘জাযাকাল্লাহু খাইর’।
এতে শুধু যে দুআ করা হলো তাই না, রাসুলুল্লাহ সা. এর একটি সুন্নাহ পালনের কারণে আল্লাহর কাছে আপনি নিজেও প্রতিদান পেলেন। ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ বললে এর কিছুই হলো না।
তবু দুঃখজনক হলো, আজকাল কিছু মুসলিম নিজেদের মধ্যেই ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ বলতে বেশি পছন্দ করেন। শুধু তাই না, ‘জাযাকাল্লাহু খাইর’ বলতে অনেকে বিব্রতবোধ করেন।
অথচ রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন (উসামা বিন যাইদ রা. কর্তৃক বর্ণিত) ‘যখন কাউকে উপকার করা হয় এবং সে উপকারীকে বলে ‘জাযাকাল্লাহু খাইর’ তবে সে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য যথেষ্ট করেছে।’ তিরমিজি: ১৯৫৮
রাসুলুল্লাহ সা. আরো বলেছেন, ‘কেউ যদি তোমার উপকার করে, তবে তাকে প্রতিদান দাও। আর যদি প্রতিদান দেয়ার কিছু খুঁজে না পাও তাহলে ততক্ষণ তার জন্য দুআ কর যতক্ষণ মনে না হয় যে তুমি প্রতিদান দিয়েছ।’ আবু দাউদ: ১৬৭২
অতএব এটি পরিষ্কার যে উপকারীর জন্য দুআ করা রাসুল সা. এর নির্দেশ। আল্লাহ বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রাসুলের।’ সুরা নিসা: ৫৯
আরো বর্ণিত হয়েছে, ‘যে রাসুলের নির্দেশ মান্য করবে সে আল্লাহরই নির্দেশ মান্য করল।’ সুরা নিসা: ৮০
পরিশেষে এটাও বলি, ‘জাযাকাল্লাহু খাইর’ বলা বাধ্যতামূলক নয়। তাই কেউ যদি ধন্যবাদ বা নিজের ভাষায় অন্য কিছুও বলেন কোনো পাপ হবে না। কোনো সামাজিক বা কর্মক্ষেত্রে যদি ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ বলার প্রচলন বেশি হয় তবে সেটা বলতেও সমস্যা নেই। তবে রাসুল সা. এর সুন্নাহ আমাদের মনে রাখা উচিৎ এবং উপকারীর জন্য দুআ করতে বিব্রতবোধ করার কোন কারণ নেই।