বাসা ভাড়া নেয়ার অজুহাতে নাখালপাড়ায় গৃহবধূ হত্যা
সুশান্ত সাহা : রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ার রেল ক্রসিং এলাকা সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মানুষের সরগম থাকে। রেল লাইনের উপরে ও আশপাশে রয়েছে কাঁচা বাজারসহ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রেল ক্রসিং থেকে মাত্র ১শ গজ দূরে অবস্থিত ২৮৮ নম্বরের রসুল ভিলা। ওই ভবনের নিচ তলার ফ্ল্যাটে নৃশংসভাবে আমেনা বেগমকে হত্যা করে তার সঙ্গে থাকা গলার চেইন, হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি ও আংটি খুলে নিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক। হত্যাকা-ের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো ক্লু খুঁজে পায়নি পুলিশ। তবে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নাকি ডাকাতির কারণসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ বলছে, এলাকায় কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকায় তদন্ত কাজে সীমাবদ্ধতার একটি বড় কারণ। নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা যুক্ত করার কথা বলা হলেও তা অনেকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় নিহতের ছোট ছেলে বাবু আহম্মেদ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এদিকে ময়নাতদন্তের শেষে গতকাল শুক্রবার জুমআর নামাজের পর পশ্চিম নাখালপাড়া বড় মসজিদে জানাজা শেষে আমেনা বেগমের মরদেহ বাসার পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ওই বাড়িতে সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের সামনে কম্পিউটারে কম্পোজ করা সাদা কাগজে একটি টু-লেট ঝুলছে। ভেতরে ঢুকতেই নিচ তলার দরজার সামনে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের দাগ। যে ফ্ল্যাটটিতে আমেনা বেগমকে হত্যা করা হয় সেটি তালা বদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
তার পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া গৃহবধূ মনি জানান, গত ১ মার্চ থেকে ওই ফ্ল্যাটটি খালি হয়। ঘটনার সময় তিনি ফ্ল্যাটে থাকলেও কোনো শব্দ শুনতে পাননি। আমেনা বেগমের ছোট ছেলের স্ত্রী বর্ষার চিৎকার শুনে দরজা খুলে বেরিয়ে খালি ফ্ল্যাটের রান্না ঘরে রক্তাক্ত লাশ পরে আছে দেখতে পায়।
ওই বাসার দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, ঘর ভর্তি স্বজন। তারা জানান, ঘটনার সময় ভবনের দ্বিতীয় তলায় আমেনা বেগমের বাসায় শুধুমাত্র ছোট ছেলের স্ত্রী বর্ষা ও ৫ বছরের নাতনি ছিলো। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে এক যুবক বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে দ্বিতীয় তলার কলিং বেল দেয়। এ সময় ছোট ছেলের স্ত্রী বর্ষা রান্না করছেন। কলিং বেলের শব্দ পেয়ে আমেনা বেগম দরজা খুলে দেন। ওই যুবক ফ্ল্যাটটির রুমগুলো দেখতে চায় । পরে আমেনা বেগম দ্বিতীয় তলা থেকে চাবি নিয়ে এসে দরজা খুলে ওই যুবককে বাসা দেখানোর জন্য ওই ফ্ল্যাটটির ভেতরে ঢোকেন। প্রায় আধাঘণ্টা পর আমেনা বেগমের ছোট ছেলের স্ত্রী বর্ষা শাশুড়িকে খুঁজতে এসে নিচ তলার খালি ফ্ল্যাটের রান্না ঘরে রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায়।