খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের মা : খুলনার জনসভায় ফখরুল
শরীফা খাতুন শিউলী, খুলনা : খালেদা জিয়াকে মাদার অব ডেমোক্রেসি (গণতন্ত্রের মা) উপাধিতে ভূষিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, দেশনেত্রীকে জেলে পাঠিয়েছেন। তাকে বাইরে রেখে নির্বাচন করার সাহস করবেন না। কারাগারের জরাজীর্ণ কক্ষে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে। তাকে ন্যূনতম আইনি অধিকার দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যত রকম অপরাধ আছে তা তারা করছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গতকাল শনিবার বিকেলে খুলনার কেডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। একইসাথে খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র ও দেশ রক্ষার জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী নেতারা পুকুর চুরি করছে। ব্যাংক লুট করা হচ্ছে। সরকার শুধু বাগাড়ম্বর করছে। মিডিয়ার সামনে মিথ্যাকে সত্য আর সত্যকে মিথ্যা বলছে। তিনি বলেন, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিলো, এখন চালের দাম ৬০-৭০ টাকা। পেট্রোল, ডিজেল গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখন আন্দোলন শুধু খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নয়, সাথে সাথে গণতন্ত্র, দেশ রক্ষা ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবোই। কারাগারে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মনোবল হারাননি, তিনি আগের চেয়ে আরও তেজস্বী রয়েছেন। ফলে আমাদের সকলকে আরও ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কেন জনগণের প্রতিপক্ষ হচ্ছেন।
এরশাদকে উদ্দেশ্য করে তার দলকে গৃহপালিত দল বলে উল্লেখ করেন ফকরুল।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। অতিথি ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধূরী, সহ-সভাপতি বরকত উল্লাহ বুলু, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক হুইপ মশিউর রহমান, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সৈয়দ মেহেদী রুমি, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবর রহমান সরোয়ার প্রমুখ ।
এর আগে শহীদ হাদিস পার্কে একই দিন ও সময়ে বিএনপি ও মহিলা আওয়ামী লীগ জনসভা আহ্বান করায় উদ্ভুত পরিস্থিতি এড়াতে শুক্রবার শহীদ হাদিস পার্ক ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জনসভার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শহীদ হাদিস পার্ক ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
এরপর দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দিলেও সকাল থেকে সেখানে মঞ্চ তৈরি ও মাইক টানাতে বাধা দেয়। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে কেডি ঘোষ রোডের হেলাতলা মোড়ে জনসভার মঞ্চ করা হয়।
সম্পাদনা: ইকবাল খান