খসড়ায় মৃত্যুদ-, কারাদ- ও অর্থদ-ের বিধান ‘ইয়াবা’কে মাদক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে আইন সংশোধনের প্রস্তাব
আনিসুর রহমান তপন : ভয়াবহ মাদক ‘ইয়াবা’ (অ্যামফিটামিন)-কে ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নতুনভাবে যুক্ত হওয়া এ সংক্রান্ত অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান আইনে এতদিন ‘ইয়াবা’ মাদক হিসেবে আইনে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এজন্য কোনো অপরাধী ইয়াবা পরিবহন, ব্যবহার বা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কার্যকর কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয় না। খসড়ায় ইয়াবার মূল উপাদান অ্যামফিটামিন এবং অন্যান্য উপাদান বেনজফিটামিন, লেফিটামিন, মেথামফিটামিন/মিথাইল অ্যামফিটামিন, মেথামফিটামিন রেসিমেট, ব্রোলামফিটামিন (ডিওবি), ডেক্সামফিটামিন, ইটিলামফিটামিন, লেভাবফিটামিন ও টেনামফিটামিনকে ‘ক’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করে আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে ‘ক’ শ্রেণির এসব মাদক (২০০ গ্রাম/মিলিলিটার পরিমাণের ঊর্ধ্বে) চাষাবাদ, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের পাশাপাশি যাবজ্জীবন কারাদ- অথবা অর্থদ- রাখার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ১০০ গ্রাম/মিলিলিটার থেকে ২০০ গ্রাম/মিলিলিটারের জন্য অন্যূন ৫ বছর অনূর্ধ্ব ১০ বছরের কারাদ- ও অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ক’ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত এসব মাদকের পরিমাণ ৪০০ গ্রাম/মিলি লিটার এর বেশি মাদকের ব্যবহার, পরিবহন, প্রসারসহ অর্থ বিনিয়োগ, পৃষ্ঠপোষকতা, কিংবা মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এসব মাদক বহন, পরিবহন, স্থানান্তর, আমদানি, রপ্তানি, সরবরাহ বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর, অর্পণ, গ্রহণ, প্রেরণ, বিতরণ, লেনদেন, ধার, প্রস্তাব করা, নিলাম করা, ধারণ, অধিকার বা দখল, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ, প্রদর্শন, সেবন, প্রয়োগের জন্য খসড়ায় মৃত্যুদ- অথবা যাবজ্জীবন কারাদ- ও অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এসব মাদকের পরিমাণ ২০০ গ্রাম/মিলিলিটারের বেশি এবং ৪০০ গ্রাম/মিলিলিটার হলে অন্যূন ৫ বছর অনূর্ধ্ব ১০ বছর কারাদ- এবং অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কঠোর ধারা সংযোজনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বিদ্যমান আইন দিয়ে মাদকের ভয়াবহতা কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। তাই সারাদেশে মাদকের ভয়াবহ অপব্যবহার, পাচার রোধ করতেই আইনের বিভিন্ন ধারা কঠোর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনটি অনুমোদন পেলে এর প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ যুবসমাজকে রক্ষা এবং মাদক ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছি। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চেšধুরী