খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির কাছে কোনো আপস নয় : ফখরুল
প্রশান্ত কুন্ডু, বরিশাল : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির কাছে কোনো আপস নেই বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি তারপর আলোচনা তারপর অন্য কিছু। গতকাল শনিবার বিকেলে বরিশাল নগরীর হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। শুক্রবার খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, তাকে যখন বললাম, কালকে বরিশালে জনসভা করতে যাচ্ছি। তখন তিনি বলেছেন, বরিশালের জনগণকে আমার সালাম জানাবেন। বরিশালের মানুষ সংগ্রামী লড়াকু। তারা গণতন্ত্রের লড়াইয়ে আছে।
মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই দেশের জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। বর্তমান অবৈধ সরকার গায়ের জোরে বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা আজ জনগণের নেত্রীকে সুচিকিৎসা পর্যন্ত দিচ্ছেনা। আজকে আপনাদের পরীক্ষা দেয়ার সময় এসেছে। পরীক্ষায় আপনাদের জয়ী হতে হবে। অন্যথায় চিরজীবনের মতো আবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে।
খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ৭১ সালে একবার জেলের তালা ভাঙা হয়েছিল। ১৯৯০ সালে এরশাদের সময় জেলে তালা ভাঙা হয়েছিল। সেদিন আমি এবং মোস্তফা মহসিন মন্টুকে মুক্ত করা হয়েছি। ঝড় উঠলে সামাল দিতে পারবেন না। আটকে রাখার চেষ্টা করবেন না।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। তাদের পুনরায় রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আমার বেগম খালেদা জিয়াকে শুধু মুক্ত করেই আনবো না, আমরা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে আবার গণতন্ত্র ও বহুদলীয় গণতন্ত্র পুন প্রবর্তন করবো।
৭১ সালে যখন পাক হানাদার বাহিনী আক্রমন করেছিল। তখন আওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়েছিল। আর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আসুন আজ নতুন শপথ করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমরা আর ঘরে ফিরে যাব না।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সমাবেশ প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন স্থানে বাধা দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরও এই জনসমুদ্র বন্ধ করতে পারেনি। তিনি বলেন, দুর্নীতি আজ একটি দলের কাছে সীমাবদ্ধ। যে দলটি একদলীয় শাসন চালাচ্ছে। এ সরকারের সময় দুর্নীতি কমবে না। বেগম খালেদা জিয়া শুধু বাংলাদেশের নেতা নয়, এখন তিনি বিশ্ব নেতা। তার নেতৃত্বেই হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে।
বিভাগীয় এ সমাবেশে বরিশাল মহানগর, জেলা, ঝালকাঠী, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের ঢল নামে। দুপুর দুইটার আগেই বিভাগীয় সমাবেশের স্থল ঈদগাহ মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। এরপর আশপাশের সড়কে অবস্থান নেয় আগত নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। সমাবেশস্থলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।