মমিনুল ইসলাম : টানা প্রায় দেড়মাসের সহিংসতায় উত্তপ্ত জম্মু-কাশ্মীরে স্থায়ী সমাধান খুঁজতে সংলাপ আবশ্যক বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার জম্মু-কাশ্মীরের বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সংলাপের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি। উপত্যকার সকল জনগণের কাছে পৌঁছাতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এনডিটিভি
বৈঠক শেষে এক বিবৃতি প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এতে মোদির বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে বলা হয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্য দিয়েই সমস্যার স্থায়ী সমাধান খোঁজা প্রয়োজন। এ সমস্যা সমাধানে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে কাজ করা আবশ্যক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কাশ্মীরে চলমান সহিংসতা বন্ধে জোরালোভাবে সংলাপের দাবি জানিয়ে আসছে ভারতের বিরোধী দলগুলো। এরমধ্যেই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে এ বিবৃতি দিলেন মোদি।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে টানা সহিংসতায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। আহতদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্যও রয়েছে।
এনডিটিভি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সরকার উপত্যকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে সেখানকার মূলধারার সবদলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে ইচ্ছুক।
তবে সরকার এটাও স্পষ্ট করেছে, কোনো সংলাপেই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পৃক্ত করা হবে না। যারা গত আট জুলাই হিজবুল মুজাহিদিন নেতা বুরহান ওয়ানি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হবার পর কাশ্মীরে সহিংস প্রতিবাদ ছড়িয়েছেন।
গত রোববার এক সমাবেশে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি কাশ্মীরে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য পাকিস্তান ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভিযুক্ত করে বলেন, নীতি স্পষ্ট হওয়া উচিত। এ লড়াই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে। জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণ দেশের সঙ্গে থেকে আবারও পাকিস্তানের মদতে সৃষ্টি এ অস্থিরতা রুখে দেবে।’
মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎকারী এ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনি জেটলির এ মন্তব্যের সমালোচনা করেন। বলেন, মন্ত্রীর এমন মন্তব্য জনগণকে আরও শত্রুভাবাপন্ন করে তুলবে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ দরকার। একটি প্রশাসনিক উদ্যোগ এখানে যথেষ্ট নয়। আবদুল্লাহ ও কংগ্রেস গুলাম আহমেদ মীর উভয়েই বলেছেন, ‘মোদি এ বিষয়টি গ্রহণ করেছেন যে, কেবল উন্নয়নই সংকট সমাধান করতে পারবে না।’
গত শুক্রবার শান্ত থাকার আহ্বান জানায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। প্রত্যেক্যের পিছনে ফিরে দেখা প্রয়োজন উল্লেখ করে বর্তমান পরিস্থিতির সমাধান খুঁজতে একসাথে বসার আহ্বান জানায় সেনাবাহিনী। তাদের সংলাপের এ আহ্বানকে সমর্থন জানিয়েছে বিরোধী দল।
সহিংস জনবহুল বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনীর ছররা বন্দুক ব্যবহার বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করতে কেন্দ্রের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে কাশ্মীরের বিরোধী দলগুলোর এ প্রতিনিধি দল। সম্পাদনা : আবু সাইদ