অর্থনৈতিক ইউনিয়ন গঠনে রাশিয়া-ইউরেশিয়াকে রাজি করানোর ভারতীয় চেষ্টা
সাউথএশিয়ান মনিটর : কৌশলগতভাবে চীনকে সংযত করার নামে যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে তার প্রধান মিত্র হিসেবে ভারতকে তৈরি উদ্যোগে নতুন সম্ভাবনা যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর ফলে।
ভারতীয় ও মার্কিন স্বার্থ তাদের চীন নীতির বিভিন্ন বিষয়ে প্রবলভাবে একই অবস্থানে থাকলেও, বিশেষ করে চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রশ্নে, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর কৌশলগত খেলায় ভারত স্্েরফ আরেকটি ঘুঁটি হিসেবে থাকতে রাজি হচ্ছে না। এ কারণে তার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী নিজস্ব ঘুঁটি চালছে।
আর তা স্পষ্ট হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক নতুন করে বিন্যাস করার উদ্যোগে এবং ইউরেশিয়ান অর্থনৈতিক ইউনিয়নের (ইইইউ) সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য রুট শুরু করার প্রয়াসে। বলা নিষ্প্রয়োজন, এ সংস্থাটি তদারকির কাজ করছে মস্কো।
ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, ভারতের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অবস্থান জোরদার এবং এর মাধ্যমে চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্যই কেবল নয়, বরং সে চায় ভারত ও ইউরেশিয়া/মধ্য এশিয়ার মধ্যে অবাধ বাণিজ্য জোন চালু করতে। এটি রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেবল সামরিক পর্যায়ের সহযোগিতার মধ্যে সীমিত না রেখে অনেক দূর এগিয়ে নেবে। আর এর মাধ্যমে ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক অন্তত কয়েক দশক পর্যন্ত গড়াবে। তবে এটি এখন বদলে যাচ্ছে। এমন এক সময় এটি ঘটছে যখন মধ্যপ্রাচ্য ও পূর্ব ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে শক্তির খেলা চলছে। একইসময় ন্যাটোও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন আবার গঠনের পাশ্চাত্যের কথিত ক্রেমলিনের ‘রুশ সম্প্রসারণবাদের’ বিরুদ্ধে সম্প্রসারিত হচ্ছে। রাশিয়ার ব্যাপারে পাশ্চাত্যের এমন মানসিকতাকে বিবেচনা করে ইইইউ’র সঙ্গে ভারতের অর্থনীতিকে একীভূত করাটা ছোটখাট কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। এ ধরনের কাজের জন্য প্রয়োজন ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি ও বহুমুখী কূটনৈতিক প্রয়াস। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ‘অর্থনৈতিক’ সম্পর্ক নিয়ে যত চ্যালেঞ্জই থাকুক না কেন, উভয় দেশের মধ্যে ইতোমধ্যেই প্রাথমিক পর্যায়ের আলাচনা হয়ে গেছে। উদারহণ হিসেবে বলা যায়, ২০১৮ সালের মার্চে রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রী ম্যাক্সিম ওরেশকিন বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা অপসারণ ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর পন্থা নিয়ে আলোচনার জন্য ভারত সফর করেন।