‘ওআইসির সম্মেলনের পর মিয়ানমারের উপর চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে ’
আশিক রহমান : ঢাকায় আজ থেকে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি (অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন) সম্মেলনের পর মিয়ানমারের উপর অব্যাহত চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ওয়ালিউর রহমান। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সারা দুনিয়া থেকে বাংলাদেশ সমর্থন পাচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের উপর যে চাপটি রয়েছে ওআইসির সম্মেলনের পর সেটি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমার ধারণা। কারণ আমি নিশ্চিত যে ওআইসি সম্মেল থেকে একটি শক্ত রেজুলেশন হবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে। মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে, তাদের জাতীয়তাও ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হবে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থাও করতে হবে মিয়ানমারকে। কেননা ওখানে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর নেই, সব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। থাকার ব্যবস্থা না করে পাঠালে কোথায় আশ্রয় নেবে রোহিঙ্গারা। ফলে সবার আগে তাদের বাসস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৭ সালে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল। ওআইসির মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে তিন লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছিল। কাকতালীয়ভাবে সেই কর্মকা-ের সঙ্গে আমিও সম্পৃক্ত ছিলাম। তখন সম্ভম হলে, এখন অসম্ভব হবে কেন? এবারও তাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে বলে মনে করি আমি। তবে আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর তৈরি করতে হবে। আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত-চীন-রাশিয়াকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের বাড়িঘর তৈরি করার ব্যবস্থা করতে হবে।
ওয়ালিউর রহমান বলেন, ওআইসিতে বর্তমানে ৫৭টি দেশ রয়েছে। ৫৭ দেশের একটি সংগঠন। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই সংগঠন অনেক ওয়েট ক্যারি করে। ৫৭টি দেশ মিলে একটি বড় পাওয়ারফুল শক্তি। ৫৭ দেশের একটি মিটিং হচ্ছে ঢাকায়। জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ এবং ওআইসিÑ তিনটি বড় পিলার। সব জায়গাতেই রোহিঙ্গা সংকটে বিনাশর্তে আমাদেরকে সম্পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা করে আসছে।
তিনি বলেন, আমেরিকা, ইউরোপ, গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো দেশও বলছে, মিয়ানমারে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। জাতিসংঘ থেকে সিকিউরিটি কাউন্সিলের সদস্যরা ্বাংলাদেশে এসেছিলেন, মিয়ানমারেও গেলেন। দেখা করলেন অং সান সুচির সঙ্গে। তাকে সাফ জানিয়ে দিলেন, যদি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে আপনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন তাহলে ক্রাইম মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ও জাতিগত নিধন চালানোর অভিযোগে কঠোর হবে বিশ্ব। এতে প্রথমবারের মতো ঘাবড়ে গেছে মিয়ানমার।
তিনি আও বলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা বলেছেন। একইসঙ্গে মিয়ানমারের উপর চাপ অব্যাহত রাখার কথাও তিনি জানিয়েছেন। ট্রাম্পের এই চিঠি কংগ্রেসের অ্যাক্টিভিট অ্যাকশনের অনেক পরে। তিনি দেখছেন যে, ইট ইজ গোয়িং আউট অব হ্যান্ড। ফলে মিয়ানমারকে চাপে রেখে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে বাধ্য করতে হবে।