রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংকের জন্য ৩,৬৩৫ কোটি টাকা খেলাপিঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা
সোহেল রহমান: ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংককে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার অধিক খেলাপিঋণ আদায় করতে হবে। সরকারের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় এ পরিমাণ খেলাপিঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এছাড়া ব্যাংকগুলোকে খেলাপিঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ, স্বল্প মেয়াদি আমানতের হার বৃদ্ধি, লোকসানি শাখা কমিয়ে আনা ও পরিচালনা মুনাফা অর্জনসহ ১৫টি সূচকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ৬টি (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এছাড়া অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায় করতে হবে আরও ৫৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংককে মোট খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে ৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের মোট খেলাপিঋণের পরিমাণ হলো ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে ব্যাংকটিকে মোট ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। চলতি অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকের মোট খেলাপিঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯২০ কোটি টাকা।
জনতা ব্যাংকের মোট খেলাপিঋণের পরিমাণ ৭ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে আগামী অর্থবছরে ব্যাংকটিকে মোট ৫৮০ কোটি টাকা খেলাপিঋণ আদায় করতে হবে।
অগ্রণী ব্যাংকের মোট খেলাপিঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আগামী অর্থবছরে ব্যাংকটিকে মোট ৬৫০ কোটি টাকা খেলাপিঋণ আদায় করতে হবে। চলতি অর্থবছরে অগ্রণী ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা।
রূপালী ব্যাংকের মোট খেলাপিঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আগামী অর্থবছরে ব্যাংকটিকে মোট ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকা খেলাপিঋণ আদায় করতে হবে।
বেসিক ব্যাংকের মোট খেলাপিঋণের পরিমাণ ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে ব্যাংকটিকে মোট ১৫০ কোটি আদায় করতে হবে। চলতি অর্থবছরে বেসিক ব্যাংকের মোট খেলাপিঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫০ কোটি টাকা।
বিডিবিএল-এর মোট খেলাপিঋণের পরিমাণ ৭০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে ব্যাংকটিকে মোট ১২০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে।
ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে বেসিক ব্যাংক ছাড়া অবশিষ্ট পাঁচটি ব্যাংককে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। বেসিক ব্যাংকের জন্য প্রভিশন সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের তুলনায় কমানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬০ শতাংশ। আগামী অর্থবছরের জন্য এই হার কমিয়ে ৪২ শতাংশ করা হয়েছে।
এছাড়া সোনালী ব্যাংককে ১০ শতাংশ, জনতা ব্যাংককে সাড়ে ১০ শতাংশ, অগ্রণী ব্যাংককে ১০ শতাংশ, রূপালী ব্যাংককে ১০ দশমিক ১ শতাংশ, বেসিক ব্যাংককে ১২ শতাংশ ও বিডিবিএল-কে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ হারে মূলধন সংরক্ষণ করতে হবে। সম্পাদনা: আনিস রহমান