মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সুদিন ফিরছে
স্বপ্না চক্রবর্তী: নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি বাতিল করেছেন। এতে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সুদিন ফিরে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পোশাক খাতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগি দেশ ভিয়েতনাম। টিপিপি সুুবিধার কারণে এতদিন দেশটি প্রায় শূণ্য শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি করতে পারতো। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারাও দেশটির পোশাক খাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতো। কিন্তু গত বছরের জানুয়ারীতে এ চুক্তি বাতিলের কারণে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক খাতের বড় বড় ক্রেতারা আবারো বাংলাদেশে ফিরতে শুরু করেছে। বিষয়টি দেশের পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত সুখবর বলে মনে করছেন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টিপিপির চুক্তি ও রানা প্লাজা ধ্বসের দুর্ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের পণ্র রপ্তানি কিছুটা কমে এসেছিল। তবে কয়েক মাস ধরে এ বাজারে আবারো ইতিবাচক ধারা ফিরতে শুরু করেছে। আর এর মূলে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র টিপিপি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা। এই চুক্তি বাতিলের কারণেই ভিয়েতনামের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে। ফলে আমাদের পোশাক রপ্তানির বিশ্ব বাজারে বড় প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা ধীরে ধীরে তাদের ব্যবসায় আবারো বাংলাদেশের দিকে নিয়ে আসছে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের তৈরি পোশাকের রপ্তানিতে সুবাতাস ফিরে আসতে শুরু করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বস্ত্র ও পোশাক দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ ষষ্ঠ রপ্তানিকারক দেশ। প্রায় ৯০ শতাংশ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পোশাক খাতে একক বড় রপ্তানি বাজারে পরিণত হয়েছে। টিপিপি চুক্তি বাতিলের বিষয়টিকে বাংলাদেশের বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির জন্য ইতিবাচক হিসেবে মনে করছেন পোশাক মালিকদের অপর সংগন বিকেএমইএ সহ সভাপতি মনসুর আহমেদ। তিনি বলেন, এর ফলে টিপিপি চুক্তির আওতায় থাকা দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানি কিছুটা কমবে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে বলেই আমি মনে করছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের সঙ্গে টিপিপি চুক্তিটি হয়। টিপিপি চুক্তির আওতায় যেসব দেশ সুবিধা বিশেষ বাজার সুবিধা পেত সেই দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চিলি, জাপান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্র।