৩৮শ কোটি টাকার সম্পদ আছে রোনালদোর
লিহান লিমা: বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ৩৩ বছরের এই সুপারস্টারের মোট সম্পত্তির পরিমাণই ৪৫ কোটি ডলার বা ৩ হাজার ৭শ’ ৮০ কোটি টাকা। ফোবর্স জানায়, ২০১৮ সালেই ১০৮ মিলিয়ন সম্পত্তির মালিক হয়েছেন এই পর্তুগিজ তারকা। এর মধ্যে ৬১ মিলিয়ন ডলার এসেছে তার বেতন, বোনাস এবং জয় থেকে। বাকি ৪৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে বিভিন্ন চুক্তি থেকে।
সিএনবিসি জানায়, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে কোটি কোটি ডলারের সা¤্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ইংলিশ ফুটবল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড-এ যোগ দেন রোনালদো। এরপরই পায়ের জাদুতে ঝড় বইয়ে দেন ফুটবল বিশ্বে। এ পর্যন্ত পেশাদার খেলায় ৬৫৪টি গোল করেছেন তিনি। তার পায়ের বীমার মূল্য ১৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ফুটবলে বিশ্বের সবচেয়ে আয় করা খেলোয়াড় নন রোনালদো। কিন্তু সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার জনপ্রিয়তায় তিনি অন্য সব খেলোয়াড়কে ছাড়িয়ে গিয়েছেন। রোনালদোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলোয়ার সংখ্যা যে কোন খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি। ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম এবং টুইটারে ফলোয়ারের সংখ্যায় লিউনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। হোকিত জানায়, এই প্লাটফর্মগুলোতে রোনালদোর ফলোয়ারের সঙ্গে ৩২৩.৪ মিলিয়নেরও বেশি। ইনস্ট্রাগ্রামে ফলোয়িং এর তালিকায় তিনি তৃতীয়, সেখানে তার ফলোয়ার ১২৪ মিলিয়ন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রিসার্চ সংস্থা ইজা জানায়, প্রতিটি পৃষ্ঠপোষক পোস্টের জন্য ইনস্ট্রাগ্রামে ২০১৮ সালে ৪ লাখ ডলার কামিয়েছেন রোনালদো। ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারিং কোম্পানি ‘নিক’ এর প্রতিটি স্পন্সর পোস্টের জন্য তিনি পান ১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোও তাকে নিজেদের কোম্পানির প্রমোটর হিসেবে পেতে উন্মুখ। বিশেষ করে ঘড়ি ও ক্যাবল কোম্পানিগুলোতে তার চাহিদা শীর্ষে। এমনকি মিশরের একটি স্টিল কোম্পানিরও ব্র্যান্ড প্রমোটর তিনি। কোন খেলোয়াড়ই এই বিষয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন নি। নিকের সঙ্গে তার আজীবন চুক্তির মূল্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে করা এই চুক্তি রোনালদো অবসর নেয়া পর্যন্ত চলবে।
প্রশ্ন আসতেই পারে, এত বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়ে কি করেন এই তারকা। রোনালদো তার বিপুল পরিমাণ অর্থ নিজের ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছেন। তার রয়েছে নিজস্ব মালিকানাধীন, লাক্সারি আন্ডারওয়্যার লাইন, ফুটওয়্যার, ব্ল্যাঙ্কেট, মোবাইল অ্যাপ, ক্রিয়েটিভ এজেন্সি, সুগন্ধী ব্র্যান্ড, রেস্টুরেন্ট এবং হোটেল। ২০১৫ সালে পাস্তানা হোটেল গ্রুপ এ তার বিনিয়োগ ছিল ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিলাসী জীবন-যাপন পছন্দ করেন রোনালদো। মাদ্রিদে তার ৭.১ মিলিয়ন ডলারের একটি ভিলা আছে। নিউ ইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে তার ১৮.৫ মিলিয়ন ডলারের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। এছাড়া সবুজ মাঠে ঘাম ঝরানো এই তারকা লামবোরগিনি ও ফেরারিসহ কয়েকটি দামী গাড়ির মালিক। ১৭ মিলিয়ন ডলারের একটি ব্যক্তিগত বিমানও আছে তার। গাড়ি এবং বিমান উভয়েই তিনি নিজের সিআর৭ লোগো ব্যবহার করেন।
তবে এত টাকা সত্ত্বেও বির্তক পিছু ছাড়েনি তার। কর ফাঁকি দেয়ার জন্য এক স্প্যানিশ আইনজীবির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন রোনালদো। যার ফলে তার দুই বছরের কারাদন্ড এড়াতে রোনালদোকে গুনতে হয়েছে ২১.৭ মিলিয়ন ডলার। সিএনবিসি।