ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ১২ মাঠ খেলার উপযোগী ৫টি
ফয়সাল খান : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় থাকা ১২টি মাঠের মধ্যে সর্বসাধারণের খেলাধুলা করার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে মাত্র ৫টি মাঠ। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু ১২৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৬টি ওয়ার্ডে ১২টি মাঠের ৭টিতেই রয়েছে অবৈধ দখল। খেলার মাঠ সংকট থাকায় এক প্রকার বন্দি অবস্থায় বেড়ে উঠছে নগরীর শিশু-কিশোররা। সুস্থ বিনোদনের অভাবে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা মাদকসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ১২টি মাঠের মধ্যে ধানমন্ডি খেলার মাঠে শেখ জামাল ক্লাব বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু করলেও বাপার মামলার কারণে তা আপাতত বন্ধ আছে। তবে মাঠটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। কলাবাগান মাঠটি দখল করে রেখেছে কলাবাগান ক্লাব। এছাড়া ৩টি মাঠ ঈদগাহ মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানায় সিটি কর্পোরেশন। গোলাপবাগ ও ধূপখোলা মাঠের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি থাকায় খেলাধুলার জন্য মাঠ দুটি এখনও উন্মুক্ত হয়নি। এসব মাঠ দখলমুক্ত করতে এলাকাবাসী মিছিল, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও কোনো সুফল আসেনি। আরমানিটোলা খেলার মাঠ, বেগমগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা মাঠ, বাংলাদেশ মাঠ, খিলগাঁও খেলার মাঠ, জোড় পুকুর খেলার মাঠগুলো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে বলে জানায় সিটি কর্পোরেশন।
এছাড়া পাড়া-মহল্লার মাঠগুলো ঘাস ও বাউন্ডারি না থাকায়, এসব মাঠে বাচ্চাদের পাঠাতে আগ্রহবোধ করছেন না অভিভাবকরা। গোলাপবাগ এলাকার বাসিন্দা নাজমা আক্তার জানান, খেলার মাঠের উপযুক্ত পরিবেশ ও নিরাপত্তা না থাকায় ছেলে মেয়েদের বাড়ির ছাদে আর বারান্দায় খেলার ব্যবস্থা করে দেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, শুধুমাত্র টিভি-কম্পিউটার, ভিডিও গেমস বা বাসার মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় শিশুদের মানসিক বিকাশ সম্ভব নয়। মুক্ত পরিবেশ না পাওয়ায় শিশু-কিশোররা নানা ধরনের মানসিক সমস্যার মধ্যে বেড়ে উঠছে বলে জানান তিনি। ঢাকা শহরে বাচ্চাদের গড়ে উঠার প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, খেলাধুলার সুযোগ না পাওয়ায় শিশুরা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে মাদকসহ নানাধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ঢাকার অপরাধ দমন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মেধাবী করে গড়ে তুলার জন্য খেলাধুলা ও বিনোদনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি জরুরি বলে মনে করেন এই মনোবিজ্ঞানী। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি