‘যত কিছুই বলুন আন্তর্জাতিক চাপে অং সান সুচিরা এখন শঙ্কিত’
আশিক রহমান : অং সান সুচি যত কিছুই বলুন না কেন, আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার এখন শঙ্কিত বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মোহাম্মদ জমির। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, রাখাইন প্রদেশে রোঙ্গিাদের উপর যে নির্যাতন হয়েছে, ধর্ষণ, আগুন ও গণহত্যা চালানো হয়েছে তার কোনোটাই তো অং সান সুচি মানতে চান না। সেই তিনি এখন বলছেন, আনান কমিশনের ৮৮ সুপারিশের ৮১ শতাংশই বাস্তবায়ন করা হয়েছে! এটার কি বাস্তব জমিন আছে? কীভাবে তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন। সিঙ্গাপুরে তিনি আরও অভিযোগ করে বলেছেন যে, রোহিঙ্গাদের তার দেশ ফিরিয়ে নিতে চাইলেও বাংলাদেশ বিলম্ব করছে!
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক একটি প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টে পরিষ্কার করে বলা আছে যে, রাখাইনে কতজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, কতজনকে ধর্ষণ করা হয়েছে, আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কত বাড়িঘর। সবকিছুর ডিটেইল দেওয়া আছে। কিন্তু মিয়ানমার বা অং সান সুচি তা মানতে রাজি নন। তারা বলছে, এই রিপোর্ট গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু রিপোর্টটা বের হওয়ার পর আসিয়ানের ১৩২টি দেশের মেম্বার অব পার্লামেন্ট সদস্য, তার মধ্যে মালেয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন, সিঙ্গাপুরসহ সবাই বলেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিচার করা উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ জমির বলেন, রোঙ্গিাদের উপর বর্বতার পর আনান কমিশন যে রিপোর্টটা দিয়েছিল, তার মধ্যে পাঁচটি বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সমর্থন দিয়েছিলে গতবছর নিউ ইয়র্কে বক্তব্যে বলেছিলেন যে, রোহিঙ্গাদের ডিগনিটি, সিটিজেনশিপ রাইটস দিয়ে ফিরিয়ে নিতে হবে মিয়ানমারকে। যাতে করে তারা নিরাপত্তার সঙ্গে নিরাপত্তা বলয়ে ঘুরতে ফিরতে পারে। কাজকর্ম করতে পারে। নাগরিক হিসেবে স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারে। একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতে পারে। এসব এখনো নিশ্চিত করেনি মিয়ানমার।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে জায়গা দিয়েছি, মানবিক জীবনযাপনের সুযোগ করে দিয়েছি। বাংলাদেশের পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব তার সবটুকু করে চলেছে। কিন্তু মিয়ামনার প্রত্যাশামতো সাড়া দিচ্ছে না। কারণ তারা তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চাইছে না। তবে বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে চাপ তৈরি করেছে মিয়ানমার উপর। আমেরিকা ইতোমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। আসিয়ান দেশসমূহ সহ সবাই এখন ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। যার ফলে মিয়ানার এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।