ফেসবুকে যদি খুঁজেন ‘বৌদি’!
পরাগ মাঝি : ফেসবুকে সার্চ বাটন চাপেনি এমন ব্যবহারকারী খুঁজে পাওয়া ভার। পরিচিত মুখ, পুরনো বন্ধু কিংবা স্মৃতির তলানী থেকে উঠে আসা কোন নাম হরহামেশাই জায়গা করে নেয় সার্চ বক্স-এ। বাটন চাপলেই চলে আসে সে নামের যত ব্যবহারকারী আছেন তার আদ্যন্ত। এ তো গেল নামের কথা। যদি সম্বোধন সম্পর্কীয় শব্দ, যেমন- বাবা লিখেও সার্চ দেন চোখের নিমেষে আপনার সামনে এসে হাজির হবে হাজারও বাবা। এবার হয়তো কৌতুহলি মন নিয়ে আপনি সার্চ দিলেন ‘বৌদি’ লিখে। তার আগে বলবো সাবধান!
আদতে ব্যাপারটা নেহাতই নিরীহ মনে হলেও। সরল মস্তিষ্কে আপনি যখন সার্চ-এর জায়গায় ‘বৌদি’ শব্দটি ইংরেজি লিপিতে লিখে এন্টার বাটন চাপবেন। ব্যাস, আপনার কাজ শেষ। খেলা তখনই হবে শুরু! ফেসবুকের এই নিরীহ সম্বোধন আপনাকে নিয়ে যেতে চাইবে এমন সব পরিসরে, যেখানে দিনের বেলাতেও গা ছম ছম করে! বাঙালির এই একান্ত আপন ডাকটিকে ঘিরে সেখানে নেমেছে ভৌতিকতার ঢল!
নাহ্, এ ভূত মোটেও হরর ম্যুভির মতো নয়। এই ভূত আমাদেরই ঘাড়ে চড়ে থাকা মর্যাল-ইমমর্যাল টাইটরোপ পায়চারির নিজস্ব প্রেত! ফেসবুকের ‘বৌদি’ কিংবা ‘ভাবি’ কোনও ডাক বা সম্বোধনমাত্র নয়। এ যেন নিষিদ্ধ এক জগতের হাতছানি!
আসল না ফেক জানা নেই, ফেসবুক এবং টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একবার ‘বৌদি’ টাইপ করলেই খুলে যেতে থাকবে অজ¯্র প্রোফাইল। স্বল্পবসনা সুন্দরী বাঙালি গৃহবধূদের হাতছানি-মার্কা ছবিছক্কা-সহ সে এক দেদার কান্ড!
শুধু ছবিই নয়, তার উপরে-নীচে কমেন্ট, তার সঙ্গে কন্ট্যাক্ট নম্বর। এরা কারা? কেনই বা এমন ধারা অতল জলের আহ্বান-মার্কা খিল্লি?
এ নিয়ে ভাবতে গেলে কোন কূল-কিনারা মিলবেনা। এ কি কোনও মধুচক্রের বিজ্ঞাপন? না কি, বাঙালির অন্তঃপুরে জমে থাকা কয়েকশো বছরের লিবিডোর উদ্দাম বিস্ফোরণ? ‘বৌদি’ কিংবা ভাবী-র মতো আপাত নিরীহ শব্দকে ঘিরে পেজ-এর ছয়লাব দশার কারণ বার করাটা কেবল মুশকিলই নয়, না-মুমকিনও বটে। মনে হতেই পারে, এই সব পেজ মধুচক্র অথবা এসকর্টের বিজ্ঞাপন। পরক্ষণেই আবার মনে হতে পারে, এই সব পেজ আরও গভীরের কিছু, যার থই পাওয়া সত্যিই দুরূহ!
বাস্তবতার নিরীখে মনোবিদরা এমন বৌদিকা-কে সামাজিক হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছেন। তারা বলেন, যদি আমরা যৌনতাকে স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারতাম, তা হলে মোটেই এমনটা হত না। এবেলা অবলম্বনে