আজাদ হোসেন সুমন ও ইসমাঈল হুসাইন ইমু: মিরপুরের রূপনগরে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি মেজর মুরাদের পরিচয় নিয়ে এখনো বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। কারন পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে তার পরিচয় জাহিদুল ও সে সেনাবিানীর মেজর ছিল বলে উল্লেখ করলেও সামরিক গোয়েন্দা ও আইএসপির এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলেনি। স্থানীয় সূত্র জানায়, কানাডা যাওয়ার কথা বলে মেজরের চাকরি ছাড়েন জাহিদুল ওরফে মুরাদ। গত রমজানে তার বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা স্থানীয়দের এ কথা জানান। গত শুক্রবার রূপনগরে পুলিশের অভিযানে নিহত হওয়ার পর এলাকাবাসী মেজর মুরাদের ছবি দেখে সে ছবি জাহিদের বলে শনাক্ত করেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে জাহিদ সবার বড়। তার স্ত্রীর নাম জেবুন্নাহার। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে। জাহিদের পৈতৃক নিবাস সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে। গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকেও সংবাদ সম্মেলন করে সে সেনাবাহিনীতে চাকরী করতো এবং তার নাম জাহিদুল বলে দাবি করা হয়, ঘটনার দিনও পুলিশ সাংবাদিকদের কাছে উল্লেখ করেছিলো, মুরাদ সেনাবাহিনীরই সদস্য ছিল এবং সেখান থেকে সে অবসর গ্রহণ করে। প্রশ্ন ওঠে তিনি কী সেনাবাহিনীর সাবেক কোনও সদস্য? নাকি জেএমবির সামরিক শাখার ছদ্মবেশী মেজর তিনি? কিন্তু শনিবার দিবাগত রাতে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মুরাদ নামে কোনো মেজর নেই। সামরিক গোয়েন্দারা বলেন, প্রশিক্ষকদের জঙ্গিরা ‘মেজর’ বলে সম্বোধন করেন। এ কারণেই হয়তো সবাই তাকে সেনাবাহিনীর সদস্য বলে মনে করেছেন। এদিকে গতকাল আইএসপির আর থেকে বলা হয়, মেজর মুরাদ নামে সেনাবাহিনীতে মেজর নেই তবে-জাহিদুল সম্পর্কে তারা বলেন জাহিদুল নামে কোনো মেজর ছিল কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কনফার্ম করার আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছেনা।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, ১৯৮৫ সালের দিকে জাহিদের বাবা নুরুল ইসলাম কুমিল্লার চাঁন্দপুর এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করেন। তিনতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় তিনি ও তার স্ত্রী জামিলা ইসলাম থাকেন। প্রথম ও তৃতীয় তলা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে নুরুল ইসলামের হার্টে রিং পরানো হয়। গত শুক্রবার তিনি চিকিৎসার জন্য স্ত্রীসহ ঢাকায় আসেন। এলাকার ইউপি সদস্য মো. ইউনুস মিয়া বলেন, জাহিদকে আমরা চিনি না। তার বাবার সঙ্গে আমাদের পরিচয় রয়েছে। জঙ্গি কার্যক্রমে সে জড়িত ছিল কিনা তাও জানি না। এদিকে, গত শনিবার দুপুরে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানায়। পরিচয় অনুযায়ী তিনি মেজর (অব.) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। জাহিদুল বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) ৪৩ লং কোর্সে প্রশিক্ষণ শেষে ২০০০ সালের নভেম্বরে সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন। গত বছরের মাঝামাঝি সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন তিনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সম্পাদনা: বিপ্লব বিশ্বাস