মো.এনামুল হক এনা : ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার ঘোষণা করেছে সরকার যা পরিমাণ হিসেবে অযৌক্তিক। এটা নিয়মবহির্ভূত হয়েছে। অর্থাৎ যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে করা হয়নি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মাদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আমাদের অর্থনীতিকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ন্যূনতম মজুরি শ্রম প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণা করার কথা নয়। এটা মজুরি বোর্ড উপস্থাপন করবে, বিভিন্ন শ্রমিক প্রতিনিধিদের কাছে। শ্রমিক প্রতিনিধি, মালিক প্রতিনিধি এটা নিয়ে আলোচনা করবে। তারপর মজুরি বোর্ড কি কারণে এরকম সিদ্ধান্তে এসেছে সেটার ব্যাখ্যা দিতে হবে, দুপক্ষের যুক্তি থেকে। তাদের যদি কোনো পাল্টা বক্তব্য থাকে সেগুলো শুনতে হবে, একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শ্রম প্রতিমন্ত্রী আর প্রধানমন্ত্রী যদি মজুরি ঘোষণা দেন, তাহলে মজুরি বোর্ডের তো আর দরকার হয় না। মজুরি বোর্ডের যে এতদিন সময় ক্ষেপণ করা হলো এর কারণ কি ছিলো? কিছুদিন আগে বর্তমান সরকার বাজেটের নিয়ম ভঙ্গ করে, বাজেটের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, মালিক পক্ষকে অনেক রকম সুবিধা দিয়েছে। শ্রমিকদের যে দাবি ছিলো সেটার কোনো রকম যৌক্তিকতা সরকার বিচার না করেই একটা ঘোষণা দিয়েছে। সরকার মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে মজুরি ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, সরকার বিজিএমএ বিকেএমএ কে সন্তুষ্ট করার জন্য ন্যূনতম আট হাজার মজুরি ঘোষণা করেছে। মালিক পক্ষকে অনেক রকমের সুযোগ-সুবিধাও দেয়া হয়েছে। আবার মজুরির ক্ষেত্রেও তাদের অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। নূন্যতম মজুরির ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত যতগুলো সমীক্ষা হয়েছে, যতগুলো গবেষণা হয়েছে, সব কিছুতেই যে পরিমাণ মজুরি ন্যূনতম হওয়া উচিত বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে; তা মানা হয়নি। বর্তমান মজুরি হচ্ছে তার অর্ধেকেরও কম। সুতরাং এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি আরো বলেন, গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশের ক্ষেত্রে এই ধরনের মজুরি অন্তরায়। সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের অবস্থান এখন অনেক উঁচুতে। অথচ বাংলাদেশের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সবথেকে নিচু। এই অসঙ্গতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ কত হলে ভালো হয় জানতে চাইলে অধ্যাপক আনু মোহাম্মাদ বলেন, দারিদ্রসীমার আয় যদি আমরা বিবেচনা করি তাহলে ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা হওয়া উচিত। যেহেতু অনেকগুলো শ্রমিক সংগঠন ১৬ হাজার টাকা দাবি করছে, এটাই একটি যৌক্তিক জায়গায় আসতে পারতো। সম্পাদনা: রেজাউল আহসান