বিজয় সরণীতে যানবাহন চলাচলে আন্ডারপাস নির্মাণ ঢাকা-চট্টগ্রামের যানজট নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক
ভবন নির্মাণে ট্রাফিক বিভাগের অনাপত্তি বাধ্যতামূলক করা
আনিসুর রহমান তপন: ঢাকা ও চট্টগ্রামে ক্রমবর্ধমান যানজট নিরসনে এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যাত্রী দুর্ভোগ লাঘব ও পণ্যের সহজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তাই সেখানে সম্প্রতি বৈঠকে বসে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সভায় যানজট নিরসনে নেয়া হয় ২৯টি সিদ্ধান্ত।
বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় যানজটের কারণ তুলে ধরে তা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং নিরসনে দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী বেশকিছু সুপারিশ ও বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিকল্পনায় ট্রাফিক পুলিশকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি রাস্তার আশপাশে ভবন নির্মাণের আগে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ট্রাফিক বিভাগের অনাপত্তি নেয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়।
রাজধানীর বিজয় সরণীতে যানবাহন চলাচলে আন্ডারপাস নির্মাণ, যেসব বহুতল ভবনের নিচের কার পার্কিং অন্য কাজে ব্যবহার হচ্ছে তালিকা তৈরি করে পার্কিং স্থান উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া এবং রাজউক বা চউক পার্কিংবিহীন বহুতল ভবনের তালিকা তৈরি করে ভবনগুলোর পার্কিং স্থান উদ্ধারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ তলার অধিক ভবন নির্মাণে ট্রাফিক বিভাগের ও দু’টি শহরের ভবন তৈরিতে পার্কিংয়ের নিয়ম পরীক্ষা করে ট্রাফিক বিভাগের অনাপত্তি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে ।
বৈঠকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের একাধিক সংস্থা যানজট নিরসনে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করলেও ট্রাফিক পুলিশকে সম্পৃক্ত না করায় যানজট নিরসনে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এর সফল পাওয়া যায়না বলে অভিযোগ করা হয়। তাই এধরনের উদ্যোগের শুরুতেই ট্রাফিক পুলিশকে সম্পৃক্ত করতে হবে। যানজট নিরসণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার নেওয়া পরিকল্পনা সমন্বয়ে জোর দেওয়া হয় বৈঠকে।
এছাড়াও রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক পয়েন্টে সিসিটিভি স্থাপন এবং ট্রাফিক অমান্যে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরিমানার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যবস্থা পরিচালনায় প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের কারিগরি সহায়তা নিতে হবে। বর্তমানে ট্রাফিক আইন অমান্যে জরিমানার হার কম বিধায় আইন সংশোধন করে জরিমানা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয় সভায়। যত্রতত্র ইউটার্ন ও উল্টোপথে গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়নেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামে কম্যুউটার ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
সভায় সদস্যরা জানান, যত্রতত্র পার্কিং ও যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে আছে ঠেলাগাড়ি, রিকশাসহ প্রায় ৩০ ধরনের যানবাহন চলাচল করতে এই দুই সিটিতে। সে হিসেবে প্রায় ৭ লাখ যান্ত্রিক ও ১০ লাখ অযান্ত্রিক যান চলাচল করছে যা রাস্তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। অবৈধ পার্কিং, ফুটপাথ দখল, রাস্তার পাশে অস্থায়ী কাঁচাবাজার, স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে না উঠা, লেন মেনে যানবাহনের চলাচল না করা, ট্রাফিক আইন না মানাও যানজটের অন্যতম কারণ। এরসঙ্গে আছে ট্রাফিক সদস্যের স্বল্পতা, জলাবদ্ধতা, ওয়াসা, গ্যাস, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়হীনতার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
এছাড়া রাজধানীর বিজয় সরণীতে তিনদিকে গাড়ি বন্ধ করে একদিকে গাড়ি চলাচলের যে সমস্যা সেটা সমাধানে সেখানে আ-ারপাস নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। অনেক স্থানে রাস্তায় ডাস্টবিন আছে সেগুলো অপসারণ করা। বর্ষা মৌসুমে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করার কথা বলা হয়। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি