ভারত সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করলেন না কাশ্মীরি নেতারা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীরে চলমান অশান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের প্রচেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হতে চলেছে। রোববার থেকে দুই দিনের সফরে যাওয়া প্রতিনিধিরা হুররিয়াত কনফারেন্স নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করলেও তারা সফল হননি। কাশ্মীরি নেতাদের গৃহবন্দি করে রেখে সর্বদলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ডাক দেওয়ায় রাজ্যের মেহবুবা মুফতি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে। জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আব্দুল্লাহ মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সমালোচনা করে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উনি তাদের গ্রেফতার করবেন এবং পিডিপি সভাপতি হিসেবে তারপর আলোচনায় ডাকবেন। তারপর আমরা অবাক হয়ে ভাবব, কাশ্মীর জ্বলছে কেন!’ আইআরআইবি
রোববার হুররিয়াত কনফারেন্সের একাংশের চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানির হায়দারপোরার বাসভবনে আলাদাভাবে দেখা করতে যান সর্বদলীয় প্রতিনিধির সদস্য সিপিআইএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা, জেডিইউর শারদ যাদব এবং আরজেডির জয়প্রকাশ নারায়ণ। গত ৬০ দিন ধরে গৃহবন্দি অবস্থায় থাকা গিলানি তাদের দিকে একবার জানালা দিয়ে তাকালেও তার বাড়ির সদরদরজা খোলা হয়নি। এ সময় গিলানি সমর্থকরা ইয়েচুরিদের দেখে কাশ্মীরের স্বাধীনতার সমর্থনে সেøাগান দেয়া শুরু করে। সেখানে মিনিট দশেক দাঁড়িয়ে থাকার পর গিলানির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তিনি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন না। ওই প্রতিনিধিরা এরপর হুমহামার বিএসএফ ক্যাম্পে বন্দি থাকা জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। ইয়াসিন মালিক তাদের সঙ্গে দেখা করলেও কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ইয়াসিন বলেন, তিনি যখন দিল্লি যাবেন তখনই ওই কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
হুররিয়াতের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গনি ভাটও কথা বলতে রাজি হননি। তার মতে, ‘এটা একটা অর্থহীন চেষ্টা। ভারত এবং পাকিস্তান আলোচনায় না বসলে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না।’ একইভাবে হুররিয়াত কনফারেন্সের আরেক অংশের চেয়ারম্যান মীরওয়াইজ ওমর ফারুকও আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
হুররিয়াত এবং জেকেএলএফ-এর পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের যে প্রচেষ্টার কথা বলা হয়েছে, তা প্রতারণাপূর্ণ। এ পদ্ধতি আসলে জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়াবে। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার কীভাবে পাবে, তার কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা আলোচনার বিষয়সূচিতে রাখা হয়নি।’ সম্পাদনা: ইমরুল শাহেদ