শাহরিয়ার কবির
কর্মকা-ের ভিত্তিতে জিয়াউর রহমানকে দুইভাবে দেখা হয়। এক. মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের মাধ্যমে এবং ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ের কর্মকা-ের মাধ্যমে। এই দুইভাবে জিয়াউর রহমানকে বিবেচনা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। উনার সঙ্গে তখন আরও যারা ছিলেন, সবাইকে এই একই সম্মানে ভূষিত করা হয়, সেটা বঙ্গবন্ধুর সময়ই। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের পর তার বেশকিছু কর্মকা-ে অনেক মানুষ তখন তার ওপর নাখোশ হয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বঙ্গবন্ধুর অনেক কাজকে নিজের বলে ঘোষণা করা। যে সব কাজ জনসাধারণের মনে প্রশ্নের জন্ম দেয়, সেই কাজগুলোই তখন জিয়াউর রহমান করেছেন। তবে একই সঙ্গে বেশকিছু ভালো কাজও করেছিলন। সব মিলিয়ে তিনি এখন কারও কাছে স্বীকৃত ভালো মানুষ এবং কারও কাছে নিন্দনীয়।
ভালো কাজের স্বীকৃতস্বরূপ তাকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছিল। সেটি বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর, সেই পদক জাতীয় যাদুঘরে রেখেছিল। বঙ্গবন্ধু ও জিয়াকে একই সঙ্গে স্বাধীনতাযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতসরূপ মরণোত্তর পদক দেওয়া হয়েছিল। বিএনপি কেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা করে একসঙ্গে তাদের পদক দেওয়া দিয়েছিল, এমনটিই ভাবছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। পদক প্রত্যাহার করে নেওয়া কিছুটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও হতে পারে। আমরা সবাই জানি, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে একটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার স্বাধীনতার পদক জাতীয় যাদুঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা করা হচ্ছে, দেশের উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক এবং এই নির্দেশ মোতাবেকই প্রধানমন্ত্রী তাতে অনুমতির স্বাক্ষর প্রদান করেছেন। উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করা যায় না বলেই হয়তো এমনটি করা হচ্ছে।
পরিচিতি: সভাপতি, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি
মতামত গ্রহণ: শরিফুল ইসলাম / সম্পাদনা : আশিক রহমান