আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৫
পরিবহন শ্রমিকদের বেপরোয়া আচরণ পরিবহন ধর্মঘটে অসহনীয় দুর্ভোগ, বেড়েছে মাছ-সবজির দাম
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীসহ সারাদেশে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে মানুষকে। গতকালও দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী যানচলাচল বন্ধ ছিলো। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে মাছ ও সবজির দাম বেড়ে গেছে। মহানগরীতে বিপুলসংখ্যক সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, মোটরবাইক চলাচল করলেও সাধারণ মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসাই ছিলো বিআরটিসি বাস।
গতকালও ব্যক্তিগত যানবাহন চালকদের হয়রানি করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। এর আগে রোববার ধর্মঘটের প্রথমদিন বিভিন্ন স্থানে পরিবহন শ্রমিকরা সাধারণ চালক ও যাত্রীদের মুখে পোড়া মোবিল লাগিয়ে নির্যাতন ও হয়রানি করেছিলো। গতকাল যাত্রাবাড়ী ও শনির আখড়ায় সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন গাড়ির চালকদের গাড়ি থেকে নামিয়ে কান ধরিয়ে ওঠবস করায়। তবে আন্দোলন ডাকা সংগঠনের নেতারা বলছেন, দুষ্কৃতিকারিরা এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। যারা আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চায় তারাই এমন ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে।
সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকদের বাধায় গাজীপুর থেকে মতিঝিল ও গাবতলী রুটে বিআরটিসি বাস চলতে সমস্যা হয়েছে। পরে রুট পাল্টে শুধু কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ভুলতা রুটে বাস চালিয়েছেন তারা। বিআরটিসির ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গির আলম জানান, ৮০টি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করেছে।
মহাখালী ও গাবতলীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের কাউন্টার খোলা থাকলেও কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। গাবতলী বাস ট্রাক মালিক সমিতির নেতা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তারা কখনো বলেননি বাস না চালাতে। তবে চালকরা মালিকদের কথা না শুনে নিজেরা আন্দোলন করছে। মহাখালী টার্মিনাল থেকেও কোনো বাস ছাড়েনি বলে জানিয়েছেন মহাখালী আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম।
বাস না থাকায় অটোরিকশা ও রিকশাচালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন। অ্যাপভিত্তিক রাইডশেয়ারিং সার্ভিসের মোটরসাইকেল চালকরাও অ্যাপে না গিয়ে চুক্তিতে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর প্রায় সব এলাকায় সকাল থেকে ব্যক্তিগত পরিবহনের চাপে যানজট ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, শ্রমিকরা সকাল থেকে মাগুরা বাস টার্মিনালসহ একাধিক স্থানে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা সড়কে চলাচলকারী তিন চাকার যানবাহনও বন্ধ করে দেয়। এমনকি সংবাদপত্রবাহী যানবাহনও তাদের হাত থেকে নিস্তার পায়নি। মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী যানচলাচল বন্ধ ছিলো। মহাসড়ক দু’টির বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল থেকেই অবস্থান নেয় পরিবহন শ্রমিকরা । তবে লঞ্চ, ফেরি, স্পিডবোট, অটোরিকশাসহ ছোট যান চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। গণপরিবহন না থাকায় মহাসড়ক ছিল ফাঁকা।
ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। জেলার অভ্যন্তরীণ রুট বা শহরেও চলছে না ছোট-বড় কোনো যান্ত্রিক পরিবহন।
একই খবর জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও দেশের অন্যান্য জেলার প্রতিনিধিরা।
সম্পাদনা : মাহবুব আলম ও সালেহ্ বিপ্লব