কল্লোল মোস্তফা
বয়লার বিস্ফোরণে প্রায়ই শ্রমিক নিহত হনÑ চালকল, গামেন্টস, টেক্সটাইল, ক্যামিকেল, টায়ার ইত্যাদি কারখানায়। কারও কিছু যায় আসে না। ভালো মানের বয়লার ব্যবহার করলে এবং বয়লার নিয়মিত সার্ভিসিং করলে এরকম ঘটার কোনো কারণ নেই। অথচ অবহেলার জন্য কোনো মালিকের শাস্তি হয়েছে এরকম কোনো নজির নেই। কলকারখানা অধিদপ্তরও কোনো নজরদারি করে না। টঙ্গির বিসিক শিল্পনগরীর ট্রাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডের যে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ হয়েছে সেটা ছোটখাট কারখানা না, এটা বাংলাদেশের বৃহত্তম প্যাকেজিং কারখানা যেখান থেকে দেশি বিদেশি বৃহৎ কর্পোরেট কনজ্যুমার গুডস/টোবাকো কোম্পানিগুলোর চিপস, চানাচুর, সিগারেট, নুডুলস ইত্যাদির চকচকে সব প্যাকেট তৈরি হয়। এই বিস্ফোরণে বহু শ্রমিক হতাহত হয়েছেনÑ যাদের হয়তো আজকে ঈদের ছুটিতে বাড়ি থাকার কথা। কোম্পানির ওয়েবসাইটে ওয়ার্ল্ড ক্লাস মেশিনারিজের কথা বলা আছে কিন্তু শ্রমিকের কর্মস্থলের নিরাপত্তা যে ওয়ার্ল্ড ক্লাস ছিল না, তা বয়লার বিস্ফোরণ, বিস্ফোরণ থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়া এমনকি চারতলা ভবন ধসে পড়ার ঘটনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলোÑ এতবড় ঘটনার পরও কি কারও কিছু যাবে আসবে, নিহত আহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ জুটবে, অবহেলার দায়ে মালিক গোষ্ঠীর কোনো শাস্তি হবে, দেশি বিদেশি কর্পোরেটরা কি বিন্দুমাত্র দায় নেবে কিংবা কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর কি জবাবদিহির আওয়তায় আসবে?
লেখক: প্রকৌশলী ও গবেষক