মোবাইল কলরেট বাড়ানোর ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা
আনিস রহমান : ভবিষ্যতে গ্রাহকের মতামত না নিয়ে মোবাইল ফোনের কলরেট বাড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাই কোর্ট।
সেই সঙ্গে কলড্রপের ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরগুলোর চার্জ কাটার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রুলসহ এ আদেশ দেয়। বিডিনিউজ
মোবাইল ফোন গ্রাহকদের অধিকার সুরক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সেই সঙ্গে মোবাইল গ্রাহকদের অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, কলড্রপÑঅনাকাক্সিক্ষত এসএমএস বাড়ানো, বর্ধিত হারে কলরেট আদায়, ট্যারিফ চার্জ না বাড়ানো এবং ঘোষিত ফোরজি সেবা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
বিদ্যমান কলরেট পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি গঠনের ব্যপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও সচিবকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, সচিব, মোবাইল অপারেটর গ্রামীণ ফোন, এয়ারটেল, রবি, বাংলা লিংক ও টেলিটক কর্তৃপক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইন সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্য এম. বদিউজ্জামান, মেহেদী হাসান ডালিম, মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশিদুল হাসান বুধবার ‘জনস্বার্থে’ এই রিট আবেদন করেন। আদালতে তাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।
আদেশের পর ইশরাত হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত রুলসহ মোবাইল কলচার্জ বৃদ্ধি ও কলড্রপে চার্জ কাটায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। প্রত্যেক বিবাদীকে নিয়মিতভাবে এসব বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছে।”
রিটকারীদের অন্যতম মেহেদী হাসান ডালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় শুরু থেকেই আমরা মোবাইল কলরেট বেশি দিয়ে আসছি। এর মধ্যেই গ্রাহকদের মতামত না নিয়ে শুধ মুনাফা করতে গত অগাস্টে কলরেট আরেক দফা বাড়িয়েছে। এটা ভোক্তা অধিকারের লঙ্ঘন।
“এছাড়া কলড্রপ বিড়ম্বনা, অনাকাক্সিক্ষত ক্ষুদে বার্তার যন্ত্রণা তো আছেই। সব মিলিয়ে দেশের মোবাইল গ্রাহকরা অপারেটরগুলোর কাছ থেকে সেবা পাওয়ার পরিবর্তে নানাভাবে ঠকছেন কিংবা যন্ত্রণা-হয়রানি এবং আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এই বিবেচনা থেকেই জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেছি।”
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একটি প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃত করে তাদের রিট আবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ মাসে ২২২ কোটি বার কলড্রপ করেছে মোবাইল অপারেটরগুলো।