সপ্তাহে ১৪ পাউন্ডে দিন সহজেই চালানো যায় বাংলাদেশে
আসিফুজ্জামান পৃথিল : বাংলাদেশের তৈরী পোষাক শ্রমিকদের অত্যন্ত কম অর্থ প্রদান করা হয় এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। দ্য গার্ডিয়ানে এর আগে এই সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যসহ সারাবিশে^র পাঠকদের মধ্যেই দেখা গেছে নানান প্রতিক্রিয়া। তবে আশ্চর্য হলেও সত্য এই অর্থেও মোটামোটি দিনযাপন করা যায় বাংলাদেশে বলে গতকাল গার্ডিয়ান এক নিবন্ধে এ মন্তব্য করেছে।
বাংলাদেশে ১ পাউন্ডে ১০০ টাকা পাওয়া যায়। অর্থাৎ ৩৫ পেনি মানে প্রায় ৩৫ টাকা। সে হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিঘন্টায় একজন গার্মেন্ট শ্রমিক ৩৫ টাকা আয় করেন। যদি একজন শ্রমিক সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা কাজ করেন, তবে ১ সপ্তাহে তার আয় হবে ১৪ পাউন্ড। বছরে মোটামুটি ৫০ সপ্তাহ কাজ করলে তার আয় হবে বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয়ের অর্ধেক। বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪০০ পাউন্ড। ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে এই আয় দাঁড়ায় ৩৬৫০ পাউন্ড। অর্থাৎ একজন শ্রমিক বছরে কমপক্ষে যা আয় করেন বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তাকে ধনী বলার কোন সুযোগ না থাকলেও একেবারে হতদরিদ্র বলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের শ্রম মজুরি কোন সাহায্য সংস্থার নির্ধারিত মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ হয় না। এটি নির্ধারিত হয় একজন শ্রমিকের সক্ষমতার ভিত্তিতে। গার্ডিয়ান পাঠকদের ক্ষিপ্ত হওয়ার ভিত্তিতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের জীবন নির্ভর করে না। যদি যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে, তবে গার্ডিয়ানের পাঠকরা আনন্দিত হতে পারেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা আনন্দিত হবেন না। বাংলাদেশে মজুরি যুক্তরাজ্যের সমান হতে আরো ৫০ বছর লাগবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রæত বাড়ছে। কারণ স্বল্প মজুরির কারণে বিক্রয়াদেশ আসে এবং রপ্তানি বাড়ে। বাংলাদেশকে একলা ছেড়ে দিন। তাদের বাড়তে দিন। নিবন্ধটি লিখেছেন ব্রিটিশ পার্লঅমেন্টের উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডের সদস্য মেঘনাদ দেসাই।