মাছের খাদ্যে বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া যায়নি, পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে, বললেন আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক
জুয়েল খান : মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচলক আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দোকান, কারখানা, খুচরা বিক্রেতা ও পাইকারি দোকান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সরকার নির্ধারিত ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বাংলাদেশের মাছ বিদেশে রফতানি করা হয়। অতএব, ক্ষতিকর কোনো ধরনের পদার্থ পাওয়া গেলে তারা বাংলাদেশ থেকে মাছ ক্রয় করতো না। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, মৎস্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা আছে। প্রতি বছর পরিকল্পনা করে দেশব্যাপী মৎস্য ও প্রাণীর খাবারের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তখন কোথাও এই ধরনের ক্ষতিকর পদার্থের নমুনা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে আইনের ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়। একইসাথে খাবার প্রত্যাহার করার জন্য কোম্পানিকে চাপ দিয়ে দেয়া হয় এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ধাতু ও রাসায়নিক সমৃদ্ধ বিষাক্ত ট্যানারি বর্জ্য খাবার হিসেবে অধিক মুনাফার জন্য লুকিয়ে ব্যবহার করছে খামারিরা। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত যখন পরিচালনা করা হয় তখন তারা ওই খাদ্য সরিয়ে রাখে, ফলে ধরা পড়ে না। যদি কোথায় এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। তবে এক্ষেত্রে যে শুধু ট্যানারির বর্জ্যই ব্যবহার হচ্ছে সেটা এককভাবে বলা যাবে না, অনেক ধরনের ক্ষতিকর বর্জ্য থেকে প্রাণী খাদ্য তৈরি করা হচ্ছে। যে খাদ্য মাছ এবং মুরগিসহ বিভিন্ন প্রাণীকে খাওয়ানো হচ্ছে, যা মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে, এর ফলে মানুষের স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা হচ্ছে।
তিনি বলেন, একটা সময় মাছচাষের জন্য জলাশয়ে গরুর গোবর প্রয়োগ করা হতো। এখন সেটা করা হয় না। কিছু জায়গাতে হাঁস-মুরগির বিষ্ঠাকে মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যা বন্ধ করা হচ্ছে। কারণ প্রাকৃতিকভাবে পালিত হাঁস-মুরগির বিষ্ঠায় কোনো সমস্যা হয় না কিন্তু এখন ব্রয়লার মুরগির খামারে স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল এবং এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এই কেমিক্যাল খুবই ক্ষতিকর। আগে একটা প্রক্রিয়া ছিলো হাঁস এবং মাছ একইসাথে চাষ করা হতো কিন্তু এখন এই সমন্বিত চাষকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এখন আমরা গুড- এগ্রিকালচার প্রশিক্ষণের ওপরে জোর দেয়া দিচ্ছি। আমরা জনসচেতনতা তৈরি করতে চাই যাতে এই ধরনের খাবার না হয়। কারণ এই খাবার খাওয়া মাছ মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিককারক।