গণমাধ্যমসহ সকল পেশা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠনের দাবি #মিটু, বাংলাদেশের
শিমুল মাহমুদ : যৌন নিপীড়নকে না বলে প্রতিটি গণমাধ্যমসহ সকল পেশা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠনের দাবি জানিয়েছে #মিটু বাংলাদেশ। একই সঙ্গে নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়কদের প্রশ্রয় না দেয়ার আহ্বান জানান। রোববার প্রেসক্লাবের আব্দুম সালাম হলে #মিটু, বাংলাদেশের ব্যানারে আয়োজিত সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়।
২০১০ সালের আইনের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিক সাজেদা হক বলেন, আইনটি এমনিতেই আছে, এখন কেবল কার্যকর করা বাকি। আমরা অনুরোধ করবো প্রচলিত আইন মেনে প্রতিটি গণমাধ্যমসহ সকল পেশা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল তৈরি করুন। এই সেলের প্রধান একজন নারী এবং বাকী ৪ জনের অন্তত দুজনকে নারী এবং প্রতিষ্ঠানের বাইরের দুজনকে সম্পৃক্ত করা জরুরি।
জীবনের বেশিরভাগ সময় কর্মজীবীরা কর্মস্থলে ব্যয় করে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এই অবস্থানকে নিরাপদ করতে হবে। সকাল-সন্ধ্যা, দুপুর কিংবা রাত যেকোন সময় যেনো কর্মস্থলে নিরাপদ পরিবেশ বজায় থাকে এজন্য সকল কর্মকর্তা এবং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
#মিটু, বাংলাদেশের ব্যানারে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা জানান, সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধে আমাদের একতাবদ্ধতার বিকল্প নেই। যৌন নিপীড়ক এবং তাদের মদদদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে এমন ধরনের অপরাধ কমে আসবে। এজন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিষ্ঠান যৌন নিপীড়নকে সমর্থন না করলে কত দ্রুত এ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব তার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। তার প্রমাণ অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা এবং অভিযুক্তকে দ্রুত আটক করায় একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ এবং আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। সেই সাথে যে দ্রুততার সাথে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, একই দ্রুততায় অভিযুক্তকে মদদদাতাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
মনোচিকিৎসক প্রফেসর ডা: তাজুল ইসলাম জানান, যৌন নিপীড়ন একটি সামাজিক ব্যাধি। এই ব্যাধিতে আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা নেয়া উচিত। শুধু তারাই না, আমাদের বেশিরভাগ লোকেরই মনোচিকিৎসকদের পরামর্শ নেয়া উচিত। সামাজিক এই ব্যাধি রোধে আমাদের সমকলকে একত্রিত হতে হবে বলেও জানান তিনি।
উন্নয়নকর্মী মুশফিকা লাইজু জানান, আমাদের দেশে আইন আছে কিন্তু এর প্রয়োগ নেই। তাই আমরা অনুরোধ করবো নারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সেল গঠন করুন। সেমিনারে বক্তারা বলেন, চাকরি রক্ষা ও নিজের পারিশ্রমিকের জন্য আর কোনো নারীকে যেনো আপোষের প্রস্তাব না দেয়া হয়। আমরা এ অবস্থার অবসান চাই। আর অবসান চাই বলেই আজকে আপনাদের সামনে এসেছি। সেমিনারে #মিটু তে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে সাংবাদিক মিনালা দিবা বলেন, ঘরে-বাইরে, অফিসে-আদালতে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন নারীরা। এই নিপীড়ন বন্ধে আমাদের একতাবদ্ধতার কোনো বিকল্প নেই। সম্পাদনা : নুসরাত শরমীন