চাল রপ্তানিতে গুরুত্ব হারাচ্ছে কলকাতার হলদিয়া বন্দর
রিফাত জাহান : ভারতের চাল উৎপাদক ও রফতানিকারক রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এ রাজ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চাল উৎপাদন হয়। গত দুই বছরেই কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর দিয়ে খাদ্যপণ্যটির রপ্তানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। এর পেছনে চালের রপ্তানি চাহিদা কম থাকার পাশাপাশি এ দুটি বন্দরের দুর্বল অবকাঠামো ও বছরের গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়ে নাব্য সংকটকে চিহ্নিত করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। বণিকবার্তা
ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক দেশ। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১ কোটি ২৫ লাখ টন চাল রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। ভারতের ইতিহাসে এটাই চাল রফতানির সর্বোচ্চ রেকর্ড। ২০১৭ সালে দেশটি থেকে মোট ১ কোটি ২২ লাখ টন চাল রপ্তানি হয়েছিল। ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া চালের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ জোগান দেয় পশ্চিমবঙ্গ। ইন্ডিয়ান রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পশ্চিমবঙ্গের রপ্তানিকারকরা সব মিলিয়ে ১০ লাখ ৪০ হাজার টন চাল রপ্তানি করেছিল। খাদ্যপণ্যটি রপ্তানি করে এ সময় তাদের আয় দাঁড়িয়েছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি রুপি। এর মধ্যে ৮ লাখ ৪০ হাজার টন চাল কলকাতা ও হলদিয়া এ দুটি বন্দর দিয়ে সমুদ্র পথে রপ্তানি হয়েছিল। বাকি চাল সড়কপথে বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে পশ্চিমবঙ্গের রফতানিকারকরা।
পশ্চিমবঙ্গের চাল রপ্তানি খাতে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের গুরুত্ব কমে আসার পেছনে দুটি কারণ চিহ্নিত করেন খাতসংশ্লিষ্টরা। প্রথমত, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় ধান-চালের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের দেশগুলোয় খাদ্যপণ্যটির রপ্তানি চাহিদা আগের তুলনায় কমে গেছে। চাহিদা তুলনামূলক কম থাকার জের ধরে পশ্চিমবঙ্গের চাল রপ্তানি খাতে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের দুর্বল অবকাঠামো ও নাব্য সংকট। এ সমস্যা সমাধানে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের নাব্য ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ওয়্যারহাউজের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে কলকাতার চাল রপ্তানিকারকরা।