খুশি হতাম যদি রপ্তানি বাড়তো : মাতলুব আহমেদ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৩০ শতাংশ
বিশ্বজিৎ দত্ত : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হলে প্রথমেই যে বিষয়টি উঠে আসত তা হলো দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি। বাংলাদেশ দাবি করতো, বাণিজ্য ঘাটতি কাটাতে ভারতকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে হবে। এখনো ঘাটতির বিষয়টি আলোচনা হয়। তবে নীরবে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে অনেক দূর। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী ভারতের সঙ্গে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ভারতের সঙ্গে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিওটিও সেলের মহাপরিচালক শুভাশিস বসু জানান,সার্ক চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এখন ভারতের বাজারে প্রায় সব পণ্যেই শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নিয়মিতই প্রচার হয় বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন। প্রাণ থেকে আড়ং ফার্ণিচার থেকে পোশাক বাংলাদেশি পণ্য এখন ভারতের বাজারে জায়গা করে নিচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত থেকে আমদানি মানেই আবার খারাপ নয়। আমরা যদি কাঁচামাল আমদানি করে ফিনিশড প্রোডাক্ট রপ্তানি করি। তাহলে মন্দের কিছু নেই। বরংচ ভারত থেকে আমদানি করতে আমাদের খরচ কম পড়ে। সড়ক পথে ভারতের কাঁচামাল একেবারে কারখানার দরজায় চলে যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০১ সালে ভারত থেকে আমদানি হতো ১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হতো মাত্র ৫০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। ২০১৪ -১৫ সালে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছিল ৬ বিলিয়ন ডলারের। কিন্তু চলতি বছর প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমাদনি কমেছে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বেড়েছে, ৪৮৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এসময়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে, ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট মাতলুব আহমেদ জানান, ভারত থেকে আমদানি কমেছে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে । বিশ্বে কাঁচামালের মূল্য কমেছে। সেখানে ভারতের কাঁচামালের মূল্য বেশি পড়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অন্যদেশ থেকে আমদানি করেছে। এই আমদানি কমার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। খুশি হতাম যদি আমদানি কমার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বাড়তো। বাংলাদেশে যেসব ভারতীয় কোম্পানিকে উৎপাদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে তাদের বলা হয়েছিল, ভারতে পরিচিত পণ্য উৎপাদন করে ভারতে পাঠান। তারা এখনো উৎপাদন শুরু করেনি। উৎপাদন শুরু হলে বাণিজ্য ঘাটতি আরও কমবে।
ভারত থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আমদানি করে তুলা। তারপরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, রেলের যন্ত্রাংশ ও লোহার পণ্য।
অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়, ওভেন পোশাক যা মোট রপ্তানির ৯০ শতাংশ। এর বাইরেও রয়েছে, ভেজিটেবল ও পেপার ইয়ার্ন ।