অর্থ বরাদ্দ নেই, হচ্ছে না রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া
আনিস তপন : মায়নমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের গতিবিধি ক্যাম্প এলাকায় সীমিত রাখার জন্য কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চতুর্দিকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করার কথা থাকলেও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তা আজও বাস্তবায়ন করতে পারেনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল জানান, এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে জাতিসংঘ শরনার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)। তারা এখন অর্থের সংস্থান করতে পারেনি, তাই এখনও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার বিষয়েও দ্বিমত করছে আন্তর্জাতিক এই সাহায্য সংস্থাটি।
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে এটা কনসাইনমেন্ট করা যাবে না। তারা ভাবছে আমরা সেখানে জেলখানা বানাতে চাইছি। আসলে বিষয়টি তা নয়, যা তারা বুঝতে পারছে না। তবে সরকার আলোচনার মাধ্যমে তাদের এই ভুল ভাঙ্গাতে চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইউএনএইচসিআর এর অর্থায়নে ক্যাম্প এলকায় রোহিঙ্গাদের জন্য সেল্টার, ক্যাম্প এলাকার রাস্তা ও সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তেমনই কাঁটাতারের বেড়াও হবে তাদের অর্থায়নে। ইউএনএইচসিআর এর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তারা জানিয়েছে অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা করছে। তবে সরকার মনে করছে ইউএনএইচসিআর আরো একটু সিরিয়াস হলেই এই প্রকল্পের অর্থ জোগাড় করা সম্ভব এবং অর্থের সংস্থান হলেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে বর্তমান সরকারের প্রথম আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট এলাকার নিরাপত্তার জন্য ১৪ ও ১৬ নামের দুটি আর্মডপুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) গঠনের প্রস্তাব দেয়া হলেও একটি ব্যাটালিয়ন গঠনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তাছাড়া ক্যাম্প এলাকায় কর্মরত দেশি-বিদেশি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ১০ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং আনসার সদস্যের সমন্বয়ে ২৪ ঘণ্টা টহল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারি অবৈধ এসব নাগরিকরা যাতে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে না পারে সে বিষয়ে তাদের উপর এবং সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধিসহ অভিযান জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি।
এছাড়াও সভায় মায়ানমারের এসব নাগরিকরা যাতে বাংলাদেশী পাসপোর্ট গ্রহণ করতে না পারে এজন্য সনদ প্রদানকারি জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ব্ষিয়ে কেউ সম্পৃক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।