যুক্তরাষ্ট্রে ইনসুলিনের দাম এক দশকে বেড়েছে ৮৪০ শতাংশ, বিপাকে ৩ কোটি মার্কিনী
নূর মাজিদ : যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা সহায়তার একটি অংশ হিসেবে জরুরি ওষুধ ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবীমা করা থাকলে বিশেষ মূল্য ছাড় পেয়ে থাকেন রোগীরা। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন কিনতেই এই ব্যবস্থার সিংহভাগ বরাদ্দ ব্যয় হয়। আর হবেই বা না কেন? ইনসুলিন ক্রয়ের জন্যে শুধুমাত্র ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই খরচের পরিমাণ বেড়েছে ৮৪০ শতাংশ! যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি উন্নত দেশের জন্য যা এক ভয়াবহ চিত্র। কারণ, ২০১৯ সালের মার্কিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুসারেই দেশটিতে প্রায় ৩ কোটির কিছু বেশি ডায়াবেটিক রোগী রয়েছেন। যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। সূত্র : কাইজার ফাউন্ডেশন অর্গ ।।
চলতি বছর প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে দেশটির খ্যাতনামা গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাইজার ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন। যদিও, স্বাস্থ্যখাতের এই দূরাবস্থা নতুন চিত্র নয়। বরং উন্নত দেশগুলোর মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়েই সবচাইতে বেশি সমালোচনা রয়েছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যবীমা ব্যবস্থার আওতায় নিবন্ধিত না হলে অনেক নাগরিক এখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে বিপুল অংকের মেডিক্যাল বিলের সম্মুখীন হন। এই জন্যেই স্বাস্থ্যবীমার আওতায় জরূরী ওষুধ ক্রয়ে কিছুটা ভর্তুকি দেয় ফেডারেল সরকার। চিকিৎসকের নির্দেশিত বা প্রেসক্রাইবড ওষুধের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই বাড়তি দামের চাপ অনুভব করছেন অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক। ২০০৭ সালে এইখাতে কেন্দ্রীয় সরকার ভর্তুকি দিয়েছিলো ১৪০ কোটি ডলার। ২০১৬ সালে যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৩৩০ কোটি ডলারে। তবে সরকারের ব্যয় বাড়লেও উপকৃত জনতার পরিমাণ আশাব্যঞ্জক নয়। কারণ আর কিছুই নয়, প্রয়োজনীয় ওষুধের উচ্চদর।
২০০৭ থেকে ২০১৬ সালে রোগীপ্রতি ইনসুলিন ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েছে ৩৫৮ শতাংশ। ২০০৭ সালে যে ইনসুলিন রোগীরা ৮৬২ ডলারে কিনতেন এখনকার বাজারে তার মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৪৯ ডলার। এই সময় মেডিকেয়ার-ডি প্রোগ্রামের আওতায় ইনসুলিন ক্রয়ে দেয়া সরকারি বরাদ্দের পরিমাণও বেড়েছে ২৮০ শতাংশ। অর্থাৎ, ২০০৭ সালে যেখানে দেয়া হতো ৯৬ ডলার, সেখানেই এখন সরকারি সহায়তা দিতে হচ্ছে ৩৬৩ ডলার। প্রেসকাইবড ওষুধের এই উচ্চমূল্য এখন মার্কিন ঘরোয়া রাজনীতিতে মুখ্য ইস্যু হয়ে উঠেছে। দেশটির রাজনীতিবিদ এবং নীতি নির্ধারকেরা এখন এই বিষয়টির আশু সমাধানে জরূরী পদক্ষেপ নেয়ার কথাও ভাবছেন। সম্পাদনা : ইকবাল খান