আবু আহমেদ বললেন, ঋণখেলাপিদের শুধু সুবিধা দিলেই হবে না, তাদের জন্য শাস্তিরও ব্যবস্থা করতে হবে
আমিরুল ইসলাম : ঋণখেলাপিদের জন্য বড় ছাড় দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই শতাংশ টাকা জমা দিয়ে পুনঃতফসিলের সুযোগ, দশ বছরে সুদ করা যাবে আর সুদহার হবে নয় শতাংশ, তবে ভালো গ্রাহকেরা সুদ ফেরত পাবেন। ঋণখেলাপিদের জন্য বড় ছাড় দেয়ার ফলে লাভ হবে কিনা জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ঋণখেলাপিদের শুধু সুবিধা দিলেই হবে না, তাদের জন্য শাস্তিরও ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং অর্থমন্ত্রীও চাচ্ছেন। এর ফলে খেলাপিঋণ কমবে কিনা এটা ভবিষ্যৎই বলে দেবে, এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে খেলাপিদের সুবিধা দিয়ে খুব বেশি যে সুফল পাওয়া যাবে আমার মনে হয় না। কারণ যাদের সুবিধা দেয়া হচ্ছে তারা আসলে সুবিধা নিতেই চায়। আজ যাদেরকে ঋণখেলাপি বলা হচ্ছে তাদের ব্যাংকগুলো আগেও সুবিধা দিয়েছিলো। কিন্তু তারা ঋণ পরিশোধ করেনি। বকেয়া ঋণের দুই শতাংশ টাকাও জমা দেয়ার শর্তও অনেকে পূরণ করবে না। ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যদি ঋণখেলাপিদের বিচার করা যায়, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা যায় তাহলে ঋণখেলাপির পরিমাণ কমবে। বাংলাদেশে এর উদাহরণ খুবই কম। বছরের পর বছর ঋণখেলাপি থাকলেও মামলা-মোকদ্দমায় কিছুই এগোনো যায় না। কারো ঘরবাড়ি দখল করা হয় না। জনগণের টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলোকে আর কতোকাল পুনঃঅর্থায়ন করা হবে? সরকার যেহেতু ব্যবসায়ীদের দ্বারা চালিত হচ্ছে, তারা দেখুক এর জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া যায়। ব্যাংকের মেয়াদি ঋণ উঠিয়ে দিতে হবে। পাঁচ বছরের কোনো দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ দেয় না। বাংলাদেশকে এটা থেকে সরে আসতে হবে। নব্বই শতাংশ ঋণখেলাপি হয় মেয়াদি ঋণের। মেয়াদি ঋণের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে আসতে হবে। চার-পাঁচ বছরের জন্য কোনো প্রজেক্টে ফাইন্যান্স করা যাবে না। তাদের শেয়ারবাজারে আসতে হবে, বন্ড মার্কেটে আসতে হবে। শুধু ছোটখাটো উদ্যোক্তাকে মেয়াদি ঋণ দেয়া যেতে পারে।