আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান মঙ্গলবার বলেছেন, শরণার্থী সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্ককে দেয়া তাদের ওয়াদা ভঙ্গ করেছে। আনাদোলু এজেন্সি
নিউইয়র্কে চলমান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত লিডারস সামিট অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এরদোগান বলেন, গত মার্চে ইইউর সাথে সম্পাদিত চুক্তির প্রতিটি শর্তই তুরস্ক পূরণ করেছে। তুর্কি নেতা বলেন, ‘ কিন্তু দুঃখজনক হলেও ইইউ তুরস্ককে দেয়া তাদের ওয়াদা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে’। তুর্কি উপকূলের এজিয়ান সমুদ্র পথে মানব পাচারকারীদের অবৈধ তৎপরতা বন্ধ করে শরণার্থী আগমণ ঠেকানো এবং তুরস্কে সিরিয়ান শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া সংক্রান্ত একটি চুক্তি গত মার্চে দুপক্ষের মধ্যে সম্পাদিত হয়। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তুরস্ক শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় সফল। কিন্তু মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘণ দেখেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শরণার্থী ইস্যুতে যে উদাসীনতা দেখিয়েছে তা কোনো ভাবেই মানবিক হতে পারে না’। ওই চুক্তি অনুযায়ী লক্ষ লক্ষ শরণার্থীদের আশ্রয় দানের শর্তে তুরস্ককে ৬.৮ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতুশ্র“তি দিয়েছিল ইইউ। তুরস্ক বিশ্বের সিংহভাগ শরণার্থীর আশ্রয় দাতা দেশ। এরদোগান আরো বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যারা শোষিত ও নির্যাতিত তাদের জন্য তুর্কি সীমান্ত সবসময় উন্মুক্ত’। সিরিয়া ও ইরাক থেকে এ পর্যন্ত ৩০ লাখ শরণার্থী তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে বলেও বৈঠকে জানান তিনি।
তুর্কি নেতা বলেন, শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় তার দেশ ২৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে এবং বাকি অর্থ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান প্রদান করেছে। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শরণার্থী ইস্যুতে তুরস্ককে মাত্র ৫২৫ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে।
শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় তুরস্ককে যে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে তার বর্ণনায় এরদোগান বলেন, তুরস্কে আশ্রয় নেয়া ৮,৩৫,০০০ সিরিয়ান শিশু স্কুলে যাওয়ার উপযোগী। এদের মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩,১০,০০০ শিশুর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর বোঝা বহনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তুরস্কের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে এরদোগান বলেন, শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য হলেও বিশ্বের এগিয়ে আসা উচিত। এছাড়া এরদোগান সারাবিশ্বে চলমান সংঘাত-সংকট মোকাবেলায় ব্যর্থতার পরিচয় দেয়ায় বিশ্ব নেতাদেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ